সূর্য তখন ওঠে না
গাছের আড়াল ভাঙলে
বাড়ির দেওয়ালে মুখ ঢাকি
কুয়াশা মাখে চোখের পাতা
সামনের অবগুণ্ঠন ভেঙে যায় ক্রমশ
শিব মন্দির পার হয়ে দত্তপাড়া আসতেই দেখি
টারজান পাগলা দ্রুতবেগে হেঁটে যাচ্ছে।
সুঠাম চেহারা, লম্বাও তেমন, অল্প বসন যথাস্থানে
স্কুল ছাত্রীরা, কমবয়সী কাকিমা-বৌদিরা কখনো সখনো
কৌতূহল মিটিয়ে নেয় অনায়াসে
তা বুঝতে আড়চোখে দেখা লাগে না
বন্ধুরা বলত সি আই ডি বা সি বি আই
আর যেদিন উধাও হয়ে গেল
সেদিন তাে শীলমোহর পড়ল
আর দেখা যায় নি টারজান পাগলাকে।


বছরখানেক হলো জটা পাগলা এসেছে
ওকে নিয়েও কম কথা হয় না
কাছ থেকে শুনেছি ভোজপুরি ভাষায় কথা বলে
রুট সেই একই।
জটা পাগলা আাবার বিড়ি খায় খুব
এখানে ওখানে টানতে দেখেছি মাঝে মাঝে
একদিন জটা পাগলাও হয়তো  হারিয়ে যাবে আবার।


আরেক আছে সিদু পাগলা,
ইতিহাসের সিঁধোর মতো দেখতে বলেই তার এমন নাম,যেটা জটা পাগলা বা টারজান পাগলার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
সিদু কারও কোনদিন ক্ষতি করেছে বলে শুনিনি
খাবার চাইলে রুষ্টচোখে দেখার আগেই
পালিয়ে যায়
সিদুর ছেঁড়া প্যান্ট ধরে হাঁটা ওর একটা ট্রেড মার্ক বা ব্রান্ড বলা যেতে পারে।
সে যতই নতুন দাও না কেন প্যান্ট ও ছিঁড়বেই।
ওর কথা অনেকেই জানে
অনেক পুরানো দিনের বনগাঁবাসী।
শুনেছি বেশ বড় ঘরের লোক
একবার ওর বাড়ির লোকেরা নিয়ে গেছিল
কিন্তু ফিরে আসে এই বনগাঁতেই
কি করে?-এ প্রশ্ন সবার মতো আমারও।


ওকে ভোরের আলো ফোঁটার আগে অনেকদিন দেখেছি ড্রেনে পটি করতে
দেখেছি শৌচকর্ম সারতেও, জল দিয়ে বা বালি দিয়েও
কেউ দেখলে লজ্জা পেতেও দেখেছি ওকে
অবাক হই পাগলরা এমন হয়!
এই সিদুকে অনেকেই ভালোবাসে
সিদু উধাও হলে কেউ কি কাঁদবে!


আর এক পাগলা আছে
ঘরের ভীতর।
আগলাতে চাইছি
উড়ে যেতে চায় কেবলই।
কে জানে কখন উধাও হবে
টারজান পাগলার মতো।
সবাই তাকেও ভুলে যাবে,  তাই না!