কাগজের নৌকা
রামপ্রসাদ( হলুদ ঘাস)


সিঁদুরে আকাশ দিগন্ত ছাড়িয়ে ক্লান্তি বুকে নিয়ে সূর্যি তাঁর মায়ের আঁচলে যখন মুখ ঢাকছে !  এক কোণে সেজেছে কাল বৈশাখীর সেই রুদ্রমূর্তি পশ্চিম আকাশে!গৃহ কোণে বসে থাকা অসহায় মানব গুনছে শৃঙ্খল মোচনের এক একটা  দিন ! বেঁচে থাকার স্বপ্ন গুলো মৃত্যুর কালো ছায়ার ঘেরাটোপে !


হাজারো পরশে তিলে তিলে স্বপ্ন দিয়ে গড়া  খড়ের ছাউনী, রুগ্ন ক্ষয়ে যাওয়া  শান্তির  কুঁড়ে ঘর!যেখানে অবাধে খেলতো দক্ষিণ হওয়া,উঠোনে হাসতো সোনালী রোদ,পায়রার বাকবাকুম মিষ্টি ডাক ভরিয়ে রাখতো ! চালায় লতানো লতিকার ফুল আলতো হওয়ায় মাথা নাড়াতো ! হটাৎ ,,,হটাৎ আকাশ জুড়ে গভীর অন্ধকারে ঢাকা মায়াবী মেঘ  হাসছে অট্টহাসি ,ধবংসের দুই চোখে চমকায় মৃত্যুর প্রবাহ !বিদ্যুতের ঝলকে অন্ধকার দুই চোখ ,মেঘের গর্জনে বাড়ছে হৃদ স্পন্দন !


প্রকৃতির সুপ্ত প্রশ্বাসের হাওয়ার তোড়ে কুঁড়ে ঘরের সাজানো গুছানো স্বপ্নের চালা লুটায়ে ভূমিতে!দিশেহারা পরিবারের বেঁচে  থাকার আর্তনাদ ,বেঁচে থাকার স্বপ্ন  আশা ,আজ নিরাশার দুয়ারে দাঁড়িয়ে, অপেক্ষা সুদিনের !দম ফাটা আর্তনাদ পৌঁছায়নি দরজার বাহিরে!অন্যদিকে ক্ষুদার চিৎকারে ছোট কোলের শিশু নিশ্চুপ  বিস্ময় চোখে তাকিয়ে,ছল ছল চোখ নিদারুন দৃশ্যে ভুলেছে আহারের প্রয়োজন!


অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি,বহিছে বাতাস ! বৃদ্ধা মায়ের আকুতি, শুষ্ক চোখ, হারানোর ব্যথায় চঞ্চল !আগলে রাখে পরিবার তাঁর আঁচল ছায়ায়!প্রার্থনায় রেখে যায়,,,, জীবন পনে বাঁচিয়ে রাখো আমার পরিবার !বিদ্যুতের ঝল কে ওই দূরে .....সোনালী রবি শস্য নিদ্রায় আচ্ছন্ন !ঝরে পড়া টুকরি আম দালান ভর্তি প্রায়!পোষা পায়রা ভেজা শরীরে খুঁজছে নিরাপদ ঠাঁই !পুকুর পাড়ের অশ্বস্থ এর   ঝরে গেছে সদ্য ফোটা নতুন পাতা ! শালিকের বাঁসা হারিয়ে গেছে বৈশাখীর দীর্ঘ নিঃশ্বাসে !


কাটলো দুর্যোগ আকাশে সহস্র তারার আনাগোনা,চাঁদের আলোর ছাউনিতে ভরেছে কুঁড়ে ঘর,হাজারো তারায় পাহারায়  ,ঝিঁ ঝিঁ রা ধরেছে সুর ! ফুটলো হাসি সবার চোখে মুখে ! শুকনো মুড়ি জল বিনিদ্র রাত্রির শেষ সম্বল ! শুধু অপেক্ষা,অপেক্ষা  নতুন প্রভাতের !তারপর কাগজের নৌকায় চড়ে বেরিয়ে পড়বো  শর্করার সন্ধানে
এক বুক খিদে নিয়ে !😢😢