আমি মধ্যবিত্তর নিম্ন সীমা থেকে
অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসেছিলাম।
অর্থের পার্থক্যের কারণে প্রিয়তমাকে হারিয়ে,
তাকে দেখানোর জন্য প্রতিষ্ঠিত হতে আমি ঢাকায় এসেছিলাম।
অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে, আশা নিয়ে
আমি ঢাকায় এসেছিলাম।


বৃদ্ধ আব্বু আম্মুকে একটু শান্তিতে রাখবো বলেই,
আমি ঢাকা এসেছিলাম।
গ্রামের সবচাইতে আলোচিত ও সম্মানিত ব্যক্তি হবো বলেই,
আমি ঢাকায় এসেছিলাম।
যোগ্য প্রেমিক কিংবা স্বামী হতেই, আমি ঢাকায় এসেছিলাম।
অনেক কষ্ট দুঃখ নিয়ে আমি ঢাকায় এসেছিলাম।


ঢাকায় এসে হরেক রংয়ের গাড়ি দেখে
আমি চিন্তায় ডুবে ছিলাম।
এমন গাড়ির মালিক একদিন আমি হব।
ঢাকা থেকে গাড়িতে চড়ে গ্রামে যাব,
গ্রামে গিয়ে আব্বু আম্মুকে গাড়িতে করে
সমস্ত গ্রামের ঘুরিয়ে বেড়াবো।


তারপর প্রিয়তমার বাড়ির সামনের টঙের দোকানে গাড়িটি থামিয়ে,
পকেট থেকে বিদেশি ব্রান্ডের সিগারেট বের করে,
আগুন জ্বালিয়ে বিজয়ের সুখে
ধুয়া উড়িয়ে টঙের দোকানের চায়ে চুমুক দিব।
আমি অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে, আশা নিয়ে
ঢাকায় এসেছিলাম।


ঢাকায় এসে মহা অট্টালিকা দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম
আর চিন্তা করতাম।
আমিও এমন মহা অট্টালিকার মালিক হব।
অট্টালিকায় আব্বু আম্মু আমারা সবাই মিলে থাকবো,
হ্যাঁ আমরা সবাই মিলে থাকবো।
আমার জীবনের সুলতানা আর আমি থাকবো একদম চিলেকোঠায়।


আমি আর আমার প্রিয়তমা পাশাপাশি বসে নীল আকাশ দেখবো,
বুকের ঠিক বাপাশে মাথা রেখে জোসনা ভরা রাত দেখব।
মনের খেয়ালে দুজন মিলে নাচবো, গাইবো,
হ্যাঁ গান গাইতে শুরু করব।
আমি অনেক বড় স্বপ্ন নিয়ে, আশা নিয়ে-
আমি ঢাকায় এসেছিলাম। ( চলমান )


◾️🔲
-রানা বর্তমান ( লেখক ও নাট্য নির্মাতা)
নিকেতন, গুলশান, ঢাকা বাংলাদেশ।


বিশেষ দ্রষ্টব্য: ভারাক্রান্ত হৃদয়ের গদ্যময় একটি কবিতা। স্বপ্নবাজ ছেলের ব্যর্থ জীবনের কষ্টের হাহাকার নির্ভর একটি কবিতা। জীবনবোধ, বিরহের, প্রেম আবেগের একটি কবিতা।