অপাপবিদ্ধ
রণজিৎ মাইতি
-------------
আমার দশ বছরের মেয়েটি এখনও ভুতের স্বপ্ন দেখে ধড়ফড় উঠে বসে বিছানায়;
সেই স্বপ্নছায়ায় ভুত আসে,রাক্ষস-খোক্ষস আসে,
কখনও কখনও উঠোনে একচিলতে ফুলের বাগানে নেমে আসে পরী।
খেলনাবাটি হাতে মেয়েটি তার সাথে একান্তে কলবল কথা বলে,
ছন্দহীন ছন্দে নাচে,খলবল হাসে
হাসির সেই ঝর্ণাধারায় ভেসে যায় প্রাপ্তবয়স্ক খড়কুটো
আমি অপাপবিদ্ধ ছায়া দেখে চিনতে পারি ছায়ার বয়স।


ঠিক একইভাবে আমার নবতিপর ঠাকুমার ছায়ায়-
স্বয়ং যমরাজ ও মৃত্যুপুরী হয়ে ওঠে জীবন্ত।
হেঁপো ঠাকুমা তখন আরও বেশি হাঁপান উদারা মুদারা তারায়।
এবং ঘেমে নেয়ে একশা হয়ে ঢকঢক জল খান।
বিম্বিত জলবিম্বে আমি দেখতে পাই বয়সের ছায়া;
ফোকলা দাঁত,বলিরেখা,নুব্জ স্নেহ অবশেষ।


অবশ্য আমার মধ্য বয়সের ছায়ায় ওসব নেই,
দুঃস্বপ্নকে বোল্ড আউট করার স্পর্ধা যারা দেখায়
একটি কালো ষাঁড় তাদের অন্যতম ।
যে ছুটে যায় অনন্তের দিকে,যার উত্তোরণের অভিমুখ সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।


যেখানে ভুত নেই,কিন্তু ভবিতব্য আছে
পরী নেই,পরীর ডানা আছে
সেই ছায়ার ছায়ায় কখনও কি ঢাকা পড়ে প্রকৃত সূর্যসারথী ?
মানুষের ভুত ভবিষ্যত বর্তমান?


আসলে স্বপ্ন চিরকাল ছায়ার প্রতিনিধিত্ব করে;
সেই ধূপছায়া এড়িয়ে-
অদূরে কোনও ভিনগ্রহেও যে হেঁটে বেড়াবে আমার চপলা লক্ষ্মী
সেই সম্ভবনাও নেই তার কাছে,
কিংবা রূপ বিগ্রহে ভাস্বর ঠাকুমার কাছে।