প্লিজ বেরিয়ে আসুন (জাড্যতা)
রণজিৎ মাইতি
-------------
এই করোনাকালে আপনি কি নিজেকে বন্দী ভাবছেন?প্লিজ বেরিয়ে আসুন স্বকল্পিত অতল গহ্বর থেকে।কল্পনার উড্ডীন ডানায় ভর করে মূহুর্তে আপনিও পৌঁছে যেতে পারেন চাঁদ,মঙ্গল কিংবা অদেখা অজানা গভীর গহীন কোনও অন্তরগ্রহে।ফোটাতে পারেন ভালোবাসার মৌরীফুল ও প্রেমের কেলি কদম্ব একসাথে।কোনো রকম গৌরচন্দ্রিকা না করে মাখতে পারেন শ্বেতচন্দন আপন দীর্ঘ ললাটে।কিংবা সৌন্দর্য সাধনায় আবিষ্ট হয়ে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন মৌরী ফুলের চারু পাঁপড়িতে।ভাবছেন তো কি করে এতোটা ছোট্ট হবেন,ক্ষুদ্র,কণিকাবৎ?


জানবেন বিন্দু থেকেই আপনার জন্ম,তেমনই বিন্দু ফুলকিতেই আপনার লয়।সুতরাং দ্বৈত ভাবনা ছেড়ে অদ্বৈত নিয়ে ভাবুন।আগুন নিয়ে খেলার আগে ভাবুন আমি কে?কোথা থেকে আসা?কোথায় যাবে এই তিমিঙ্গল?দেখুন,আগুনের কাছে সমুদ্রের বিশাল বালিরাশিও কতো ক্ষুদ্র মনে হয়।


আসলে দ্বৈত ভাবনাই আমাদের দাঁড় করিয়ে দেয় মায়া নামক এক আশ্চর্য মায়াবী রাক্ষসের পেছনে।সে প্রতিটি মুহূর্তে গিলে খেতে চায় শরীর,দ্বৈত মনন।আর রচনা করে মিথ্যা।আমরা মিথ্যার চক্রব্যুহে আটকে যেতে যেতে সেটাকেই সত্য ভাবি,শিব সুন্দর ভাবি।শিব কি কখনও অন্ধকার হতে পারে?হতে পারে সত্যের অপলাপ?


সুতরাং বন্দী না ভেবে এক আত্মা থেকে বেরিয়ে মিশে যান পরমাত্মায়,নির্গুণ ব্রহ্মে।অবশ্য মিশতে চাইলেই পারবেন না মিশতে।নির্গুণ থেকে সগুণে ফেরার নামই সাধনা।শিব সাধনা।সবাই শৈব হতে পারেন না।যিনি পারেন তিনিই পান অমরত্ব।কারণ অমর ফলও আসলে তীব্র এক বিষ,কালকূট।গলায় ধারণ করতে পারলে আপনিই নীলকণ্ঠ।


না পারলে কি হবে ভেবেছেন কখনো ?উল্টে ঘনঘন হাই উঠবে,কিন্তু ঘুমাতে পারবেন না।বরং সারা শরীরে তীব্র যন্ত্রণা অনুভব করবেন।অনিদ্রা কি কখনও অসহ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে পারে? বরং চির ঘুমের দিকে ঠেলে দেয়।তখন মাথার উপর এলোমেলো হাওয়া ও বিষবাষ্পে ভরা আকাশ।


অতএব বেরিয়ে আসুন ওই পথ থেকে,আত্মনিয়োগ করুন সবুজে।দেখবেন নিমেষে বেড়ে যাচ্ছে বাষ্পচাপ।যদি একটি বার ওড়াতে পারেন হৃদকবুতর,অনন্তে মেলে দিতে পারেন উন্মুক্ত ডানা কেউই রোধ করতে পারবেনা আপনার গতি।তরতর করে এগিয়ে যাবেন দ্বৈত থেকে অদ্বৈতে।


জানবেন জাড্যতা শুধু জড়ের ধর্ম নয়,মনেরও ।আত্মা থেকে পরমাত্মার দিকে তার অভিমুখ।আত্মা থেকে ব্যোমে,শূণ্যে-- মহা --- মহাশূন্যে---- । যেমন হাঁটছে আজও সিমলার ছেলেটি।যার কোনো স্থিতিজাড্য নেই,আছে কি জড়তা ভ্রামক?