কে তুমি,-বিদেশিনী?বিজন পদ্মা-পাড়ে
দাঁড়ায়ে একাকিনী?কণক-কুরঙ্গীনী,
যথা কণক-কাণনে নীরবে বিচরে
-উদাসীন।কি তব শুভ নাম?-নন্দিনী?
বিবরি কি করি আমি,-সুরূপার রূপ?
দেখি যবে ও কৃষ্ণ কেশ রাশি,কুঞ্চিত
কুন্তল,মনোহরে নীরবে,আসি পাশে
বস যবে ভাবি রে বিরলে.-লো –সুন্দরী
কে দিলা আসি ঢালি,পূরিয়া কেশ-ডালি,
সৃজিলা অকাতরে?আসিয়া বিধি বুঝি
নির্ম্মিলা একদা,ও উর্মিল-রাশি,যেন
কৃষ্ণ বারিদল কৃষ্ণসাগরে সতত
করে কেলি মহা আনন্দে,-সুনন্দমনে;
কিরূপে রূপসী তুমি সাজাও সুকেশে
গন্ধে,মৃদুমন্দে,-পারিজাত সম?কভু
বা এলোকেশী,কদাপি যুক্তবেণী,মুক্ত
করবী তুলি কবরী-বন্ধনে,যদাপি
ভ্রমি আমি গহন-কাণনে,কুরঙ্গীনী
যেথা বিচরে অদূরে,তারে দেখি তব
কথা স্মরি রে উদাসে;যেমতি আকুতি
সারঙ্গ-নয়নে,তেমতি মিনতি দেখি
তব ও নয়নে;সুনেত্রজোড় আবরি
রঞ্জিয়া অঞ্জনে;ওষ্ঠেরে সৃষ্টিলা মাখি
লোহিত বরণে,-কুসুমকোমল;যেন
স্থাপিলা সিঁদুরে বিধি তোমার অধরে।
তব ও পয়োধর,সে অহংকারে বলে
“হেন সুচাগ্র অগ্রে কে ধরে এ জগতে?
লভে কি শৃঙ্গচুড় কোমল কান্তি,কভু
ঝরে কি সেথা পরম শান্তি;-অবিরাম?
আছে কি গিরিবর তোমার ও শরীরে,
তুষার পাষান ছাড়ি ভিন্ন অন্যরূপে?
স্নেহাদর,স্নেহমায়া মাখি,অগ্রে বৃন্ত
রাখি,অল্প উষ্ণে আমি সদা থলথলি;
বদ্ধ আঁখি খুলি সদ্দজাত শিশু,পূরে
উদরে সে সুধা সদা পরম আদরে”।
কি ভাগ্যবলে তব ও কাঁচুলি লভয়
পরশ নিবিড়ে,দেখি সদাহাস্য মুখে
চেষ্টিছে রুধিবারে ও যুগলে সঘনে;
উথলি ভূতলে পড়ি হায় যদি যায়
গড়াগড়ি?কটিবন্ধ অন্ধে কেলি করে
কটিদেশে,অশেষ পুণ্য করি লুটায়
উরুতটে নিতম্বেরে ধরি,-অবিরাম;
আহা কি আরাম,কী শীতল স্থল,যেন
শেয-উপাধান,-দ্বি-খন্ড;যদি পাইরে
একাকি হেন শিরধানে ইচ্ছি নিদ্রিতে
শিরতলে ধরি,নিবির পরশে দুখ
পরিহরি;যথা লভয়ে নিষুন্তি ঘোর
বৈশ্রবন-অনুজ,সে ব্রজমালা-পতি।
স্মরাঙ্কুশ রাঙিল নখরঞ্জনী,আসি
সুগন্ধি দিলা দেহভরি অলক্তরাগ
ভুষিল ও চরনে আসক্তে,-কৃষোদরী
রমনী তব কৃষাঙ্গী দেহ,যবে ছলে
যাও পথে দোদুল্য-গতি,দেখি নিতম্বে
সুকম্পন,দেখি তরঙ্গ,তুরঙ্গ সম;
ভাবি তৃণাসনে বসি,ভাবিরে বিরলে,
সুরূপা রমনী তুমি,-এ ভবমন্ডলে।


আমার বাংলাদেশি এক বান্ধবীর উদ্দেশ্য এই কবিতাটি লেখা,তার নাম নন্দিনী রানী দাস,থাকেন ঢাকা,বাংলাদেশে,তাকে কল্পনা করেই এই লেখার এটি একটি ছোট্টো প্রয়াস,আমি তাকে কি ভাবে ভেবেছি বা কল্পনা করেছি তা এই কবিতায় বর্ণনা করেছি,অমিত্রাক্ষর ছন্দে,এই ভাষা এখন কেউ ব্যবহার করে না,তাই অনেকেরই বুঝতে অসুবিধা হতে পারে,সকলেই যাতে বুঝতে পারে তাই আমি সম্পুর্ন কবিতাটির ব্যাখ্যা দিলাম(তবে দাঁড়ি,কমা,সেমিকোলন এ ঠিকঠাক থামলে কবিতা পড়তে ভালোলাগে) :-


কে তুমি,-বিদেশিনী?বিজন পদ্মা-পাড়ে
দাঁড়ায়ে একাকিনী?কণক-কুরঙ্গীনী,
যথা কণক-কাণনে নীরবে বিচরে
-উদাসীন।কি তব শুভ নাম?-নন্দিনী?
বিবরি কি করি আমি,-সুরূপার রূপ?


নন্দিনী আমার কাছে বিদেশিনী,কারন তিনি বাংলাদেশের নাগরিক,আর আমি ভারতিয়,এখানে ওনাকে কল্পনা করেছি যেন তিনি জনহীন পদ্মা নদীর পাড়ে একা উদাসীন হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন,তার অপূর্ব রূপ দেখে আমি মুগ্ধ,তাই তাকে দেখে মনে হচ্ছে (কণক-কুরঙ্গীনী,যথা কণক-কাণনে)কোনো সোনার হরিণী সোনার উদ্দানে উদাসিন অবস্থায় বিচরন করছে।এই সুরূপার রূপ আমি কি করে বিবরন করব?


দেখি যবে ও কৃষ্ণ কেশ রাশি,কুঞ্চিত
কুন্তল,মনোহরে নীরবে,আসি পাশে
বস যবে ভাবি রে বিরলে.-লো –সুন্দরী
কে দিলা আসি ঢালি,পূরিয়া কেশ-ডালি,
সৃজিলা অকাতরে?আসিয়া বিধি বুঝি
নির্ম্মিলা একদা,ও উর্মিল-রাশি,যেন
কৃষ্ণ বারিদল কৃষ্ণসাগরে সতত
করে কেলি মহা আনন্দে,-সুনন্দমনে;


তার মাথার কুঞ্চিত কালো চুল দেখি যা আমার মনকে নীরবে হরন করে,তুমি যখন আমার পাশে এসে বস,তখন মনেহয়,-হে সুন্দরী,কে কেশের(চুলের)ডালি সাজিয়ে নিয়ে এসে তোমার মাথায় অকাতরে সৃজন করল,মনেহয় বিধাতা ওই কালো ঢেউয়ের মতো চুল তোমার মাথায় নির্মান করলো,তোমার চুল দেখলে মনেহয় যেন কৃষ্ণসাগরে কালো জল(বারিদল)সুন্দর মনে(সুনন্দমনে)মহা আনন্দে সর্বদা(সতত)খেলা(কেলি)করছে।


কিরূপে রূপসী তুমি সাজাও সুকেশে
গন্ধে,মৃদুমন্দে,-পারিজাত সম?কভু
বা এলোকেশী,কদাপি যুক্তবেণী,মুক্ত
করবী তুলি কবরী-বন্ধনে,যদাপি
ভ্রমি আমি গহন-কাণনে,কুরঙ্গীনী
যেথা বিচরে অদূরে,তারে দেখি তব
কথা স্মরি রে উদাসে;যেমতি আকুতি
সারঙ্গ-নয়নে,তেমতি মিনতি দেখি
তব ও নয়নে;সুনেত্রজোড় আবরি
রঞ্জিয়া অঞ্জনে;ওষ্ঠেরে সৃষ্টিলা মাখি
লোহিত বরণে,-কুসুমকোমল;যেন
স্থাপিলা সিঁদুরে বিধি তোমার অধরে।


হে রূপসী তুমি তোমার কেশ কিভাবে সাজাও?আমি অবাক হয়ে যাই,কি সুন্দর গন্ধ তোমার ওই কেশদামে যেন মনেহয় স্বর্গের পারিজাত ফুলের সুগন্ধের সমান।কখনো খোলা চুলে(এলোকেশী),কখনো বিনুনী করে(যুক্তবেনী),কখনো করবী ফুল দেখি তোমার খোঁপায় বা বিনুনীতে(কবরী-বন্ধন)।যখন(যদাপি)আমি গভীর(গহন)বনে(কাণন)ভ্রমন করি,যেখানে হরিণী(কুরঙ্গিনী)বিচরন করে,তাকে দেখে উদাস হয়ে তোমার(তব)কথা স্মরন করি(স্মরি);যেমন(যেমতি)হরিণীর(সারঙ্গ)চোখে আকুতি দেখি,যেন কিছু বলতে চায়,তেমনি(তেমতি)মিনতি আমি তোমার ওই সুন্দর কাজল(অঞ্জন) মাখা চোখেও দেখি।তোমার ওই লালরাঙা(লোহিত বরণ)ঠোঁট যেন অতিশয় নরম(কুসুমকোমল),যেন তোমার ঠোঁটে(অধর)ঈশ্বর(বিধি=বিধাতা)সিঁদুরের লাল রং স্থাপন করেছেন।


তব ও পয়োধর,সে অহংকারে বলে
“হেন সুচাগ্র অগ্রে কে ধরে এ জগতে?
লভে কি শৃঙ্গচুড় কোমল কান্তি,কভু
ঝরে কি সেথা পরম শান্তি;-অবিরাম?
আছে কি গিরিবর তোমার ও শরীরে,
তুষার পাষান ছাড়ি ভিন্ন অন্যরূপে?
স্নেহাদর,স্নেহমায়া মাখি,অগ্রে বৃন্ত
রাখি,অল্প উষ্ণে আমি সদা থলথলি;
বদ্ধ আঁখি খুলি সদ্দজাত শিশু,পূরে
উদরে সে সুধা সদা পরম আদরে”।


তোমার(তব)স্তনযুগল(পয়োধর)যেন অহংকার করে বলে(যদিও সে অহংকার আমার কাছে যুক্তিযুক্ত)হিমালয় পর্বত কে,যে “আমার মতো সামনে এরকম সুঁচালো আকার এ জগতে আর কার সামনে আছে?পর্বতও উঁচু আমিও(স্তনযুগল)উঁচু,তার ও আমার দুজনেরই অগ্রভাগ সুঁচালো,কিন্তু পর্বত(শৃঙ্গচুড়)কি আমার মতো কোমল?বা তার মধ্যে কি আমার মতো শান্তি আছে?-হে পর্বত(গিরিবর)তোমার ওই শরীরে বরফ আর পাথর ছারা আর ত কিছুই দেখি না,কিন্তু আমাকে দেখ,আমার মধ্যে আদর,স্নেহ,মায়া পাবে,আমার সামনে বৃন্ত(বোঁটা)আছে,আবার একটু গরম হলেই আমি থলথল করি,সদ্দজাত শিশু চোখ খুলেই আমার অমৃতসুধা পান করে,-হে পর্বত তুমি উঁচু হতে পারো,কিন্তু আমার মতো কোমল রূপ কি তোমার আছে?”


কি ভাগ্যবলে তব ও কাঁচুলি লভয়
পরশ নিবিড়ে,দেখি সদাহাস্য মুখে
চেষ্টিছে রুধিবারে ও যুগলে সঘনে;
উথলি ভূতলে পড়ি হায় যদি যায়
গড়াগড়ি?কটিবন্ধ অন্ধে কেলি করে
কটিদেশে,অশেষ পুণ্য করি লুটায়
উরুতটে নিতম্বেরে ধরি,-অবিরাম;
আহা কি আরাম,কী শীতল স্থল,যেন
শেয-উপাধান,-দ্বি-খন্ড;যদি পাইরে
একাকি হেন শিরধানে ইচ্ছি নিদ্রিতে
শিরতলে ধরি,নিবির পরশে দুখ
পরিহরি;যথা লভয়ে নিষুন্তি ঘোর
বৈশ্রবন-অনুজ,সে ব্রজমালা-পতি।


তোমার বক্ষ-আবরনী র অনেক সৌভাগ্য,সে তোমার স্তনযুগলের নিবির স্পর্শ(পরশ)লাভ করে,তাই দেখি সে সর্বদা হাসিমুখে চেষ্টা করছে(চেষ্টিছে)তোমার ওই স্তনযুগল কে ধরে রাখার জন্য যদি বেড়িয়ে মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি যায়,তোমার স্তনযুগলের বক্ষ-আবরনী(কাঁচুলি)হতে বেড়িয়ে আসার প্রবৃত্তিকে সর্বদা হাসিমুখে রোধ করে চলেছে,তোমার কটিবন্ধ অন্ধের মতো তোমার কটিদেশে খেলা করে বেরায়,তারও কি সৌভাগ্য,অশেষ পুণ্য করেছে বলেই তোমার কটিবস্ত্র তোমার ওই নিতম্বকে জড়িয়ে ধরে রাখার সুযোগ পায়,আমার মনে হয় তোমার ঐ নিতম্ব কি আরামের শীতল জায়গা,যেন মনে হয় শয্যার(শেয)বালিস(উপাধান)দুই ভাগে ভাগ করা(দ্বি-খন্ড);যদি পাই কখনো এমন বালিসের মতো তোমার শীতল নিতম্বকে,ঘুমাতে চাই আমি এমন বালিস(শিরধান)মাথার নিচে(শিরতলে)দিয়ে,এই বালিস নিতম্বের স্পর্ষে সব দুঃখ পরিহার করে গভীর ঘুমে(নিষুন্তি ঘোর)আচ্ছন্ন হতে চাই,যেমন ঘুমায় কুম্ভকর্ণ(বৈশ্রবন-অনুজ,অর্থাৎ রাবনের ভাই,কুম্ভকর্ণ র শ্ত্রী ব্রজমালা তাই কুম্ভকর্ণকে ব্রজমালা-পতি বলা হয়েছে)।


স্মরাঙ্কুশ রাঙিল নখরঞ্জনী,আসি
সুগন্ধি দিলা দেহভরি,অলক্তরাগ
ভুষিল ও চরনে আসক্তে,-কৃষোদরী
রমনী তব কৃষাঙ্গী দেহ,যবে ছলে
যাও পথে দোদুল্য-গতি,দেখি নিতম্বে
সুকম্পন,দেখি তরঙ্গ,তুরঙ্গ সম;
ভাবি তৃণাসনে বসি,ভাবিরে বিরলে,
সুরূপা রমনী তুমি,-এ ভবমন্ডলে।


যেন মনেহয়,তোমার নখ(স্মরাঙ্কুশ)স্বয়ং ঈশ্বর রাঙিয়ে দিয়েছেন,স্বর্গ থেকে নখরঞ্জনী(Nail-Polish)নিজেই এসে তোমার নখে স্থাপিত হয়েছে,যেন সেই ভাবেই সুগন্ধি নিজেই নিজের সার্থকতার জন্য তোমার শরীরে ছড়িয়ে পরেছে,অলক্তরাগ(আলতা)যেন তোমার রূপে আসক্ত,তাই তোমার ওই চরন দুখানিতে নিজেই স্থান গ্রহন করেছে,সত্যি তুমি সুন্দরী,যখন তুমি পথে হেটে যাও তখন আমার এই দুচোখে তোমার সৌন্দর্য উপভোগ করি,তোমার হাটায় তোমার নিতম্বে কম্পনময় দোদুল্য গতি(Like Pendulum)পরিলক্ষিত হয়,যা অসাধারন,তাই আমি ভাবি এই বিশ্বমাঝে(ভবমন্ডল) তুমিই রূপসী।