আজ আমি তোমাদের একটি অ্যাকসিডেন্টের গল্প শোনাবো
বন্ধুগণ তবে শুরু করি,
সূচনাটা বড্ড সাদামাটা, নেহাতই সস্তা কাহিনী
একটি ছেলে খুব সহজ সরল নয়
আবার তেমন জটিল-কুটিলও নয়
দুইটা অসাধারণ ফ্লেভারের মেলানো-মেশানো গন্ধ !
দু’চার কলম লিখতে জানে তবে ছন্দের বালাই নেই তাতে
আর সুরের কথা তো বাদই দিলাম !
তবুও কেমন যেন অদ্ভুত ধরনের গাঢ় লিকার আছে !
কোন মাদকতা নেই, কোন মোহ নেই
তবে কাঁচা ঘুম ভাঙিয়ে দেয়ার জম্পেশ মাল-মসলা আছে…
তারপর এই আঁধ-পাকা অর্থব ছেলেটার সাথে
কোন কলেজ চত্বরে দেখা হলো এক অপ্সরীর !
আগেভাগেই বলে নেই “অপ্সরী” কথাটা আমার নাহ,
ওর বলা, সে যাই হোক
ও ললনা অপ্সরী নাকি শাকচুন্নী তা বিবেচ্য বিষয় নয় ।
ওই যে রবীন্দ্রনাথের পর বাংলায় নোবেল পাওয়ার স্ব্প্ন দেখা ছেলেটা,
নজরুলের মত গণমানুষের কন্ঠস্বর হতে চাওয়া
কিংবা লালনের মত আধ্যাত্নিকতার চাদরে
নিজেকে জড়িয়ে নিতে চাওয়া ছেলেটা
হঠাৎ কেমন যেন গুটিয়ে যেতে লাগলো !
স্বচ্ছন্দ, দুরন্ত, প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর সেই ছেলেটা
কেমন মিলিয়ে যেতে লাগলো,
দিনের পর দিন, ঘন্টার পর ঘন্টা
‘ছুটি’ গল্পের ফটিকের মত ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকতো !
কখনো সাহস হয় নি তার, মেয়েটার সাথে কথা বলার !
“তুমি সুন্দর তাই চেয়ে থাকি একি মোর অপরাধ?”
তারপর দিন-মাস-বছর পেরিয়ে গেলো গোটা কয়েক…………
সুর হারিয়ে খুঁজে ফেরা সেই ছেলেটা
কবির সুমন হতে চাওয়া সেই ছেলেটা
নচিকেতার মত জীবনমুখী গায়ক হতে চাওয়া
কিংবা হায়দার হোসেনের মত চোখের জল মেশানো
কোন অনবদ্য গানের স্রষ্টা হতে চাওয়া ছেলেটা,
কেমন বিশ্রী রকমের সাহস করে
একদিন কাঠ-ফাঁটা রোদ্দুরের ঘামে ভেজা টি-শার্টে
নীল সালোয়ার আর সাদা ওড়না অপ্সরীকে বলেই ফেললো,
“ভালোবাসি ভালোবাসি, এই সুরের কাছে দূরে
জলে-স্থলে বাজায় বাঁশি, ভালোবাসি!”
মেয়ে জাত তার স্বভাব-সিদ্ধ নীতি অনুসারে
বিনা কোন বাক্য ব্যয়ে, রাবণের মত বিষাক্ত বাণে
দ্ব্গ্ধ করার কোন উপায়ই বাকি রাখলো না !
তারপর শুনতে চান কি হলো এরপর?
কি ভাবছেন? নিজ হাতের রগ কেটে
কিংবা বাসার সিলিং ফ্যানে ঝুলে ইহজনমের ইতি টানলো !
নাকি গাঁজা-সিগারেট-ইয়াবার নীল বিষে তিলে তিলে হারিয়ে গেলো?
আপনারা তো এমনই অ্যাকসিডেন্টের কথা শুনতে চান, তাই না?
কিন্তু গল্পটা মোটেও এমন নয় !
সেই ছেলে তারপর আবার পূর্ণোদ্যমে নতুন করে
বাঁচতে চাইলো, স্মরণীয় হতে চাইলো………
তবে এবার আর কারো মতো করে নয়
লিজের মতো, একেবারে সোজাসাপ্টা উন্মাদের মতো,
বাহাত্তর বছরে একবার ফিরে আসা হ্যালির ধূমকেতুর মতো !
এর বছর দশেক পর, দেশ জোড়া খ্যাতি হলো তার
লেখক হিসেবে, আর্টিস্ট হিসেবে, শিল্পী হিসেবে ।
দুনিয়া জোড়া খ্যাতি হলো তার বিখ্যাত ফিল্মমেকার হিসেবে !
যা ভাবেনি কেউ, যা চাইনি কেউ কেউ
সে তা হয়ে দেখিয়ে দিলো সবাইকে !
বলেছিলাম না আমি আপনাদের একটি অ্যাকসিডেন্টের গল্প শোনাবো !
এক-একটি মহাপুরুষের উত্থানে গল্প কোন অ্যাকসিডেন্টের চেয়ে কিছু কম নয়……………………