কৃষক সম্প্রদায়ের একজন,
নাম নিয়ে চিন্তা নেই,
পরিচয়ে নেই ইতিহাস।
শুধু বলা যেতে পারে -
আজ সকালে ;
ভোরের সূর্য ওঠার আগে,
ধানের ক্ষেতের ঐ ধারে,
পঁচা জঞ্জাল ছাড়িয়ে কিছু দূরে,
ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে ছিলো,
আজ সকালে।


সবাই বললো,
বেশ কিছু আগেই
ও নাকি জীবনের সাথে
শেষ চুক্তি মিটিয়ে ফেলেছে।


দোষ যে ওর ছিলো না-তা নয়।
জোতদারের প্রাপ্য টাকা ঠকিয়েছে,
বলেছিলো দশজনের হয়ে,
"আমাদের রক্তে চষা জমি,
দেহ নিংড়ানো শ্রমে
ঘাম ঝরানো ধান আমাদেরই,
আমাদের ...শুধু আমাদের. ..।"


সেই লোকটাই,
জন্মলগ্নে পেয়েছিল পৈতৃক ঋণ-
আর অসংখ্য শঙ্খধ্বনি ,
অন্নপ্রাশনে পেয়েছিলো,
দেনা নির্মিত-সামান্য অনুষ্ঠান।
এইভাবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে,
কখনো রোগের দুঃখে,
কখনো ভোগের আনন্দে,
ঋণের বোঝা বেড়েই চলেছিলো,
একদিন জমি গেল।


কিন্তু তবু পথে নামলো না।
মহান মহাজনের অসীম করুণা,
নতুন এক ভাগচাষী জন্মালো,
মাথা বিক্রীত, এককথায় ক্রীতদাস।


কখন গোপনে,
মনে ঝড় উঠেছিল কে জানে?
জনস্রোতে হাত মেলালো সে,
শত্রুদের চিনতে শিখলো,
করতে শিখলো-
জোতদারের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ।
জমাট বাঁধা ঘৃণা আর ক্রোধে,
শানিত করলো মন-তলোয়ার।
একসাথে সবাই মিলে
ঘোষণা করলো অসহযোগিতা।


হয়তো বা বিদ্রোহ কিংবা বিপ্লব।
মোটের উপর-
বৃক্ষ রোপিত হলো একটা,
যত্নের দায়িত্ব নিলো অনেকই।


কিন্তু আজ সকালে-
নিশ্চিন্তে বলা যেতে পারে,
শুধু একজনকে ,
বৃক্ষের রক্ষা দায়িত্ব থেকে-
মুক্তি দিলো ওরা।
আজ সকালে।


যখনো রাত পরিস্কার নয়,
বোঝা যাচ্ছে না সূর্য উঠবে কিনা,
চারদিক কুয়াশাচ্ছন্ন,
তেমনি সময়-
জীবনের শেষ ইংগিতে-
একটা তারা খসে গেল।
আজ সকালে।


ওরা কারা? কে করলো এ কাজ?


"কেহ..বা..কাহারা ...
বিশেষ তদন্ত চলিয়াছে। "