(১২ টি ভাগে প্রকাশিত ছন্দময় গাঁথাটি একসঙ্গে
প্রকাশ করলাম, যাতে  কেউ  চাইলে একসাথেও  
পড়বার সুযোগ  পায়।)


পাঠ -


রূপকথা নয় এ গপ্পো এক ছোট্ট ছেলের কথা।
স্কুলগাড়ি বা খেলার মাঠে,
গ্রীল জানালায়, রাস্তা ঘাটে,
এমন ছেলে খুঁজলে মেলে নিত্য হেথা হোথা।


ছেলে মানেই খোকনসোনা,
জোছনা রাতে চাঁদের কণা,
দুষ্টু মিষ্টি হাসির যেন প্রাণভোমরা এক।
নাম ছিলো তার ...কি হবে নামে?
পরিচয়টা কী থাকবে থেমে...
যদি বলি খোকনসোনাই নামটি রয়ে যাক।


ঘর ছিলো তার অচিন গাঁয়ে, রূপনারায়ন কূলে,
ভাবুক খোকন ভুলতো জীবন, লাগলে হাওয়া পালে।


নৌকা বাওয়া মাঝিদের গানে,
দেখতো উদাসী আকাশ পানে,
বয়ে যেত মনে কল্পনাদল বসলে নদীর ঘাটে।
ভোরের আলোয় দেখতো বসে,
দল বেঁধে সব পাখিরা এসে,
কেমন করে আপন বোলে গান গেয়ে সব ওঠে।।


মনভরা এক খুশির আমেজে,
ঘুরতো ভাবনা কাজে বা অকাজে,
কখনো কবিতা হয়ে তার মিতা
দূরদেশে পাড়ি দিতো।
ভাই,বোন বা দাদার থে‌কে,
নিজেকে একটু তফাতে রেখে,
ভাবনাগুলোকে আপনার ঝোঁকে
আঁকতো ইচ্ছেমতো।।


এমন খোকন নিজেরই মন কেমনে বন্দি রাখে,
প্রথম কবিতা বলে সেই কথা 'ওরা আমায় ডাকে'...


প্রথম কবিতা -


ওরা আমায় ডাকে


ওরা যে আমায় ডাকে
কোন সুদূরের থে‌কে
সেই ডাক ভেসে আসে
জানি না,
রঙিন ও মায়াজালে
বাঁধা মন ওঠে দুলে
তাও এ মনেই ভাসে
চিনি না।


ভরা নদী ঢেউ তোলে
খোলা বায়ু বয়ে চলে
দেখে সবাই কেন যে
দেখে না,
ফুলে ভরা নীপ শাখে
দোয়েল কোয়েল ডাকে
শুনেও লোকে কেন তা
শোনে না?


সময় তার কি কম?
প্রশ্ন জাগায় ভ্রম,
ঠিক নয় কখনো তা
হয় না,
ভোলা মন নেই বলে,
খোলা মনে কই চলে?
সে দেখা হৃদয় ভরে
রয় না।


পাখির সুরেলা ডাকে
হাজার কাজের ফাঁকে,
সাড়া দিতে তর যেন
সয় না,
ওদের জগতে আমি
রঙে রূপে রসে নমি
দূরে যেতে মন আর
চায় না।


পাঠ -


ভাবনা খোকন অনেকের চেয়ে
বেশিই ভাবে,
মা বাবা তাই চিন্তার জড়োসড়ো।
নতুন নতুন  কল্পনাতে যখন
খোকন  ডোবে,
বোঝাই যায়না বয়সে সে নয় বড়ো।।


সুযোগ পেলেই যায় বাগানে
প্রজাপতির পাখার টানে
রঙবাহারে চোখ জুড়িয়ে নিতে।
সবুজ মাঠে নদীর ঘাটে
নানা রঙিন ফুল যে ফোটে
রঙিন পাখি মাতে সুরের গীতে।।


যেতে যেতে স্তব্ধ গতি,
কাঁটাতারেই বাগান ইতি,
বেড়া ডিঙিয়ে যাবার আশাটা
কূল খুঁজে না পায়।
ফিরতি পথে আপন মনে,
আঁকে আবার তুলির টানে,
কেমন করে রূপনারায়ণও
কাঁটাতারেই গায়।।


পড়াশুনায় মন্দ নয় সে,
সময় মতোই পড়তে বসে,
মন ভরেনা তাতেও কারো আর।
ওর হিসেবে কেউ চলে না
তাই অঙ্ক কিস্যু মেলেনা
যখন কাটেনা মনে দুখের ভার।।


পড়ার চাপে পড়তে গেলে,
অক্ষর সব ডানা মেলে,
এদিকে ওদিকে ছোটে অবিরত।
মন বসে না খোকন বসে,
মন ঘোরে ও নীল আকাশে,
উড়ে যাওয়া মেঘ পরীদের মত।।


বুঝতে পারবে এসব কথা
কবিতা 'ভাবনা ' পড়ে,
শাসন কেমন আসন পাতে
খোকার জগৎ জুড়ে!


দ্বিতীয় কবিতা -


ভাবনা


ভাবছিল বসে খোকা
আকাশেতে উড়বে,
প্রজাপতি রঙে রেঙে
ফানুসেই চড়বে।


ডানা মেলে উড়ে যাবে
বলাকার মতো,
পৃথিবীর পাহারায়
যাবে অবিরত।


খবরটা আছে ওই
গ্রহান্তরিরা,
বড় কাছে এসে সব
দিচ্ছে পাহারা।


নিশানায় চোখ রেখে
ভাবতে যে হবে,
আজো না ভাবলে ঠিক
বেলা বয়ে যাবে।


"খোকা,ঘরে চলে এসো,
দিদিমনি আসবে"
আমি যদি এত পড়ি
এটা কে ভাববে!


পাঠ


ছেলেবেলায় গপ্পোবলায়
কিম্বা পড়ার জন্য,
'দোলন দা' ছিলো  ওর জীবনের
আদর্শ অনন্য,
উনি ছিলেন গৃহশিক্ষক,
বন্ধু এবং সঙ্গী,
ওর কথারই যাদুতে খোকন,
দেখতো মেঘের ভঙ্গী।


কুঁচবরণ কন্যা মেলতো
মেঘবরণ চুল,
বিশেডাকাত করতো পুজো
নিয়ে জবার দুল,
স্পষ্ট ছিলো এসব দৃশ্য
আকাশজোড়া মেঘে,
দাদার লেখা কবিতা খোকাকে
জাগাতো নবরাগে।


ইচ্ছে ছিলো তাকে নিয়েও
কবিতা লিখুক দাদা,
ইচ্ছেপূরণ করলেন উনি
ফুরালো কবিতা সাধা।


'কবিতা আমার চাই'  ছিলো তার খোকার জন্যে লেখা,
পছন্দসই হলো কতটুকু নাহয় যাক না দেখা।


তৃতীয় কবিতা


কবিতা আমার চাই


একটা কবিতা চাই
মিলছে না? তা নাইবা মিললো
ছন্দ নেই? তা নাইবা থাকলো
এলোমেলো কিছু কথাতো আছে!
তাতেই চলবে ছাই
তবু ,কবিতা আমার চাই,
কি হলো? লেখনা!!
লিখবে নাতো?
আচ্ছা মনে রেখো
এরপর আর তোমার সাথেতে
কে কথা বলে দেখো।


কি বললে? বয়েই গেলো,
তাতো যাবেই,
আমি আর কে!
আড়ি আড়ি আড়ি
জম্মের মতো আড়ি
আজ থেকে হলো তোমার আমার
একদম ছাড়াছাড়ি।


যতোই খুশিতে মাতো
কিছুতে আর তোমার সঙ্গে
কথাই বলবো নাতো,
আড়ি কিন্তু... একদম!
দূর ছাই, শুনেও শোনে না
মারবো কিন্তু!


কি বল্লে?
কবিতা হয়ে গেছে
কি? পেয়ে গেছি?
কই না তো!
ও মা তাইনাকি?
তবে আর কি.......
ডাব ডাব ডাব
একদম ভাব।


পাঠ :


খোকাকে দাদু ভালবাসতো
প্রাণের থেকেও বেশি,
খোকন ছিলো আর ছিলো
তার অঙ্ক রাশি রাশি।


বকলে খোকন আপনমনে,
দাদুর জবাবও অচেতনে,
যখন দাদু থাকতো ব্যস্ত
অঙ্ক নিয়ে তার,
ভাবলে এখন অবাক লাগে,
অমন জটিল গুনে বা ভাগে,
কি করে দাদু অনায়াসে
মেটাতো প্রশ্নভার।


এমনি এক সাতসকালে
কাণ্ড ঘটলো এক,
ঘটনা তবে 'দাদুর রাগ'
কবিতায় শোনা যাক।


চতুর্থ কবিতা


দাদুর রাগ


দুষ্টু ছেলের বকবকানি
চলছিল সেই সকাল থেকে,
দাদুর রাগও বাড়ছিল তাই
বললে দাদু জোরসে হেঁকে,
"ওরে, কে আছিস, আয় না -
খোকনটাকে নিয়ে যা,
দেখছিস না নইলে আমার
অঙ্ক মোটেই মিলছে না। "


চিৎকারেতে ঘাবড়ে খোকন
ছুড়লে যখন হাতখানা,
কালিতে অঙ্ক ভরেই গেল
হেসেই দাদু আটখানা।
অঙ্কের কি মূল্য তা তো
এখনও তুই বুঝলি না,
মিলিয়ে দিলি সবকিছু তাই
একটুও তুই ভাবলি না।


বল্লে দাদু, "আয় রে আয়,
একটা তবে  গল্প বলি,
কেউ এলেই ফেলবে শুনে,
দাঁড়া দরজায় খিল তুলি। "
এই বলে দাদু দুহাত বাড়িয়ে
কোলে তুলে নেয় খোকনকে,
খাতা পত্তোর রইলো পড়ে
ছড়িয়ে যেমন রোজ থাকে।


পাঠ


রাত্তিরবেলা শুতে গেলেই পড়তো খোকন বই,
প্রথম প্রথম ভাবতো সবাই নেশাটা মানানসই।


কিন্তু যখন রূপকথাতে রাজারানীর ভীড়,
স্বপ্নে এসে আঘাত হানে,
ভয় পায় দানোদত্তি পানে,
পড়ার নেশা বকুনি খেয়ে বিলকুল চৌচির।


'বুড়ো আংলা' পড়তে পড়তে ঘুমিয়েছিলো রাতে,
কী হলো সেটা শোন এবার 'রবিবার' কবিতাতে।


পঞ্চম কবিতা


রবিবার


রবিবার এলে সকাল না হতে
আঁকছি মনেতে ছবি,
কোথায় বা যাব কোথায় না যাব
হাজারো কথাই ভাবি।


আজো রবিবার থাকতে আঁধার
গেলাম যে ময়দানে,
খেলার বল তো নাগালেই আছে
মন সবুজের টানে।


সাতগোলে হেরে ফিরলাম বাড়ি
মুখটি বেজায় কালো,
ঘরে না ঢুকতে বললেন বাবা
"খোকন জ্বালাতো আলো"।


দেখ না দাদার বইয়ে গ্রামার
রয়েছে সহজ ভাবে,
চেষ্টা করলে বুঝতে পারবি
কোথায় 'এ / এ্যান' হবে।


ধ্যাত্তেরি! একে হারের দুঃখে
মনটা রয়েছে ভার,
এখন কি আর ঢুকবে মাথায়
ইংরেজির গ্রামার?


মনটা কেমন বিগড়েই গেল
সক্কাল বেলা আজ,
সান্ত্বনা শুধু সার্কাসে যাবো
বিকেলে বন্ধ কাজ।


এমনি সময় বেরসিক মাও
ফাটালেন তার গলা,
"উঠে পড় খোকা! স্কুলে যাবি না!!
দেব না কী কানমলা???"


ভয়ে তাড়াতাড়ি বিছানাটা ছাড়ি
মনে মনে রেগে যাই,
'সোমবার বড় শিগগির আসে
ভালও লাগে না ছাই'।


পাঠ


ভাবনা খোকার বেড়েছে অনেক
পড়ার সংগে সংগে,
'হযবরল'র বেড়ালটা ওকে
মাতিয়েছে মহারঙ্গে।


শয়নে,স্বপনে,  দেখে সে কেমনে
তালগাছ উড়ে চলে,
একটাই পায়ে ভর করে তবু
চারিদিকে চোখ মেলে!


সময়ের সাথে তাল মেলালেও
'মানা'র বহর বেড়েছে অনেক,
"অংক খাতায় ছড়া কেন?"
"দুষ্টুমি করবে না কোন! "
"দেয়ালে কেন আঁকছো ছবি?
"খেলবে না নিয়ে তালাচাবি! "
এমন শাসন সব সময়েই
প্রতিদিন প্রায় শতখানেক।


কবিতা "বড় যে হতেই হবে"
স্তবকে স্তবকে সেই কথা বলবে।


কবিতা ষষ্ঠ/ এক


বড় যে হতেই হবে


আমি নাকি দুষ্ট বড়ই
                        সক্কলে তাই বলে,
আসলে ওরা বলে, আমার এই
                    পিস্তলে ভয় পেলে।
সকাল থেকেই মাথায় আমার
                    ফন্দি ফিকির ঘোরে,
লুকোই অনেক! তবুও খানিক
                      বের হয়ে তার পরে,
তাতেই কপালে নিত্য নতুন
                    পিট্টি আমার জোটে,
দেখেও না ওরা, ঠোঁটটি তখন
                    কেমন ফুঁপিয়ে ওঠে।


পাঠ


বোনের জন্যে পুতুল কিনে
মা ফিরেছেন বাড়ি,
গাবলুর মতো গালদুটো তার,
মুখটা - গোমড়া ভারী।


রেশমি চুলে ভর্তি মাথা,
বোনের যত যত্ন সেথা,
চান করিয়ে জ্বর এনেছে-
চিকিচ্ছে দরকার।
বোঝেই না কেউ এসব ব্যাপার,
তাইতো খোকন সেজে ডাক্তার
গলায় দাদার স্টেথোটা নিয়ে
করে চিকিৎসা তার।


পরের ঘটনা! নয় বলবার,
এই স্তবকেই বর্ণনা তার
রয়েছে কিছু কিছু,
দেখোই না সবটা পড়ে,
কত না দুঃখে উপরের ঘরে,
খোকা করে মাথা নীচু।


কবিতা ষষ্ঠ/ দুই


বড় যে হতেই হবে


বোনের পুতুল নতুনই ছিলো
                        জামাটা খুব শক্ত,
পরীক্ষা তার করা দরকার,
                        বুকটা এবং রক্ত।
ব্লেড দিয়ে সবে কাটছি জামাটা,
                    মা বলেন কান ধরে -
"কাটতে শিখছ? দেখাও তো দেখি,
                অমনি জামাটি গড়ে। "
আমি ডাক্তার হলে! পারতো কি মা
                  মুলতে দু'কান হেন?
বলতো উল্টে, "দেখ তো খোকা,
                মাথাটা ঘুরছে কেন? "


পাঠ


জন্মদিনে বাবা ছিলেন না ঘরে,
টয়ট্রেন নিয়ে ফিরেছে দুদিন পরে।


ব্যাটারিচালিত ট্রেনটা ঠিকই
লাইন বরাবর চলে,
বোনেরও নজর ওটার উপরে
দুজনই তাই খেলে।


লাইট জ্বলে না তেমন জোরে,
তা দেখে বোন ঠাট্টা করে।


বেজায় রেগে টাইট করে লাইট
স্ক্রু ড্রাইভার হাতে,
দেখেছে কাকাকে এমনি ফাইট
যখন তখনই দিতে।


কপালফেরে তারপর কী হলো?
পরের স্তবকে পুরোই বলা হলো।


কবিতা ষষ্ঠ/ তিন


বড় যে হতেই হবে


বাবা আমায় টয়-ট্রেনটা
                    দিয়েছে জন্মদিনে,
লাইট দুটি তার টাইট করতেই
                   ভাঙলো অলুক্ষুণে।
বলেন বাবা "ভাঙতে শিখেছো,
                আর দেব না গাড়ী। "
কি করে বোঝাই, গড়তেও পারি
                মাটির কলসী, হাঁড়ি ;
চুপ করে যাই। ইঞ্জিনিয়ার
                  হতে দাও একবার,
বাবা বলবেন, "দেখ্ তো বাবা,
            কী যে হলো ব্রেকটার! "


পাঠ


ছোটমেসো তাকে প্লেন দিয়েছে;
দিয়েছে জন্মদিনেই,
চাবি দেয়া প্লেনে প্রপেলার ঘোরে
ছোটেও সমুখপানেই।
টিভিতে দেখেছে প্লেন সারাবার
কায়দাকানুন কতো!
প্রপেলার তাই খুলে ফেলে খোকা
নিজের হিসেব মতো।


কপাল আমার!লাভটা কি হলো?
শেষের স্তবকে সেটা ঠাঁই পেলো।


কবিতা ষষ্ঠ/ চার


বড় যে হতেই হবে


প্লেন ভেঙেছি, প্রপেলারটার
                ভেতর দেখবো তাই,
লাভের মধ্যে লাভ হলো শুধু
                    দাদার গাট্টাটাই।
দেখো দাদাকেও পাত্তা দেব না,
                নীল আর্মস্ট্রং হলে,
এসব কথা বুঝবে না কেউ
                  বৃথাই যাচ্ছি বলে।
কপালদোষে সবাই আমায়,
              ভাঙার দলেই ভাবে,
ভাঙা ছেড়ে তাই গড়ছি মনটা,
                বড় যে হতেই হবে।


পাঠ


ইচ্ছে খোকা মন্দ করেনি
স্বপ্নটা তার ভালো,
দেখা যাক সে চলার পথে
পায় কতটুকু আলো।


খোকার স্বপ্ন বড় হবে বলে
বড় নয় শুধু দেহে,
আপনার পায়ে দাঁড়াতেই হবে
মায়া,মমতা,স্নেহে।


ওর ভাবনারা পায় যদি ডানা
পারে আকাশে উড়তে,
পরিনত হয় জীবন যুদ্ধে
স্বপ্ন ছেড়ে সত্যে ...


বুঝবে সেদিন সবাই তাকে বুঝবে,
কল্পনাদল সেদিন ঠিকই খুঁজবে।


কোরাস


আমরা এসেছি, আমরা এঁকেছি,
অনেক স্বপ্ন খোকার,
তা বলে ভেব না এমন স্বপ্ন
খোকার শুধুই একার।


তোমরা এখন বড়োর দলে
ভাবো না সেসব দিন,
যেদিন ছিলো খোকার মত
স্বপন সায়রে লীন।


ছিলোনা কি আর সেই সব দিনে
এমন ভাবনা দল?
বাধা পেলেও কী মনের আড়ালে
ফেলোনি অশ্রুজল?


মানছি আজ তোমরাই বড়,
হয়তো সঠিক শাসনও কর,
তা বলে কি আর স্বপ্ন ছাড়াই -
বড় বলো হয়েছিলে?
স্বপ্ন দেখে তো সব মানুষেই,
বড় হবার ও বাসনা থেকেই,
ধীরে ধীরে ওরা বন্দী হয় যে -
না জেনে স্বপ্নজালে।


তাই তো আমি ও আমরা সবাই
খোকার মতই কল্পনা আঁকি,
খোকার পথেই ভাঙা মন পথে
গড়ার চেষ্টা লুকিয়ে রাখি।


তোমরাও যদি দাও আমাদের
মনখুশিতে ছুটতে,
আশা তোমাদের নাও হতে পারে
একটুও আর মিথ্যে।


দেখো, আমরাও হতে ঠিক পারি
ছোট্ট থে‌কে মস্তো,
মনের সূর্য উদয়ের আগে
নাও যেতে পারে অস্ত।


ভাবনা ভাবতে সময় দিও গো
কাজের পাশে পাশে,
আর বলব কী? প্রণাম জানাই
সবারে 'স্বপ্ন' শেষে।


                       সমাপ্ত