আবার দেখা হলো,
তবে আমার এই জন্মে প্রথমবার।
আকাশে কোনো চাঁদ ছিলো না সেদিন-
এক পৃথিবী অন্ধকার নিয়ে গিয়েছিলাম তোমার দুয়ারে।
বিস্মিত হয়েছিলাম!
এতো আলো!
দূরাকাশের চাঁদ নামক আলোর গোলকটা
যেন আমার জন্যই জমিনে নেমে এসেছিল,
চিরকাল দূর থেকে আমাকে আচ্ছন্ন করে রাখা বস্তুটা
যেন আমার হৃদয়ের নৈমিত্তিক আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল সেদিন,
আর তাই; আমাকে দেখতে …!
অবাক হয়েছিলাম!
রক্তমাংসে গড়া নিছক কোনো মানবী
চিরযৌবনা ওই রূপসী আলোর বৃত্যটাকেও
অবলীলায় ম্লান করেদিতে পারে বুঝেছিলাম প্রথমবার।
সব রূপকথাকেও তুচ্ছ মনে হলো সেই ক্ষণে।
আচ্ছা চাঁদ কি এতোটা রূপসী হয়?


কিছুক্ষণ ভুলেই গিয়েছিলাম- তুমি চাঁদ, না না মানবী,
আমার মানবী।
তোমার রূপে অন্ধ এ চোখে চাঁদ এখন মূল্যহীন।
সত্যি বলছি;
হাজারটা চাঁদের বিনিময়েও এখন তোমায় আমি হারাতে চাই না।
মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলাম,
এতো অল্প সময়ে কেউ আমাকে এতোটা সম্মোহিত করেনি আর কখনো।


চারিদিকে দুপুর রাতের নীরবতা,
যেন আমি আর তুমি ছাড়া বাকি সবকিছুই থমকে ছিল।
অপলক চেয়েছিলাম দুজন দুজনাকে,
কারো মুখে কোনো কথা ছিলনা।
চোখে যখন মন পড়া যায়- কথা বলার তখন কি হেতু?
দুজনার বুকজুড়ে বাঁধভাঙা প্রেমের ঢেউ উঠেছিল।
দুইটা আলাদা সমূদ্র-
যেন সব বাঁধা উপেক্ষা করে একাকার হয়ে যেতে চাইছিল।
নীরব দুজন মানব মানবী-
নিজেদের সত্বা গুলিয়ে ফেলেছিলাম একে অন্যের মাঝে।
আশ্চর্য হয়েছিলাম!
তবে সত্যিই কি আমি …?
হ্যাঁ, সেদিন তুমি আর তোমার ছিলে না  
যেমনটা আমি ছিলাম না আমার।
পুরো পৃথিবীকে ঘুম পাড়িয়ে -
যেন কেটে গেল তুমি আমিময় শত যুগ,
তারপর ঘুম ভাঙল সবার।
স্তব্দ হয়ে যাওয়া প্রকৃতিকে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়ে-
যেন সেইক্ষণে আরেক জন্ম শুরু করলাম দুজনে।
বিশ্বাস করো;
তোমার ছোঁয়ায় আমি আরেকবার নবজন্ম পেয়েছিলাম সেদিন।
আমার মনে নেই- তুমি আমাকে ছুঁয়েছিলে কি না,
তবে এই নস্মর শরীরের খাঁচায় বন্দী থাকা হৃদয়টা-
সযত্নে ছুঁয়েছিল তোমার হৃদয়কে।
এটাইতো সব তাই না?
আত্মার মিলনের এই শক্তিতেইতো সব জন্মে তুমি আমার হও।
কেউ হয়তো জানেই না
শরীর স্পর্শ না করেও কতটা কাছে আসা যায়।


জানিনা; সেই আদি থেকে কেউ -
আদৌ হৃদয়ের মিলন করতে পেরেছিল কি না?
তবে আমরা পেরেছি,
আমরাই সার্থক মানব মানবী।
তোমার আমার সকল দূরত্ব কেবল নবজন্মের বিচ্ছেদ মাত্র।
আমাদের পুনর্মিলন কেবল সময়ের ব্যাপার।
বুঝলাম আবার।


মিলনানন্দে সবকিছু ভুলেই গেছিলাম,
মনে প্রাণেই ছিলো না- আঁধারের সমূদ্রে ডুবে ছিলাম দুজনে।
আঁধার ...
কোথায় আঁধার?
তখন আলোয় আলোকময় আমার সবকিছু।
সম্মুখে সয়ং আলোর দেবী!
পৃথিবীটা তোমাকে আমার মতো ভালোবাসলে-
আজ আমার মতো হয়ত সবকিছুই আলোকিত হতো,
এতোটা অন্ধকার থাকত না আমাদের চারপাশে,
কিন্তু আমি ছাড়া আর কেউ দেখতে পায় না তোমার আলোর ছিটেফোঁটাও।
বলতেই হয়- আমি অনেক ভাগ্যবান,
আমি ছাড়া আর কেউ তোমার আলোর সন্ধান পাক এটা আমিও চাই না।
সব জন্মের মতো এইবারো তুমি আমার,
আমি ধন্য আমার এই অলৌকিক বরাতের জন্য।


কেউ জানে না-
তোমাকে কতটা কাছে পেয়েছি সেদিন,
বিনিময় হয়েছে কত যুগের প্রেম,
আর- রোমন্থন করেছি কতো জন্মের স্মৃতি।
থাক,
কেউ নাইবা জানল আমাদের মন প্রাণ সব মিলেমিশে একাকার হবার কথা-
সবাই জানুক আমরাও জাগতিক নিয়মে মিলব কেবল জৈবিক কারণে-
অন্য সবার মতো।
এবার নাহয় পৃথিবীর মানুষের গড়া হাস্যকর নিয়মই হোকনা-
আমাদের এই জন্মের মিলন,
তারপর .........