প্রথম যেদিন বনলতার খুব কাছাকাছি
বসেছিলাম, সেটা ছিল টিচার্স ট্রেনিং
কলেজের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে।
মঞ্চের এক কোণে প্রায় গাদাগাদি করে
বসেছিলাম আমরা এক ঝাঁক তরুণ তুর্কি।
ওর চেয়ারটা ছিল ঠিক আমারটার সাথে
সাঁটানো, একদম গাঁয়ে গাঁ লাগার জো!


খুব সম্ভবত ও গিয়েছিল মঞ্চের উপস্হাপনা
কৌশলের মহড়া দিতে,আগে কোনোদিন কথা
হয়নি; মাঝেমধ্যে শ্রেণীর কাজের ফাঁকে লুকিয়ে
লুকিয়ে ওর মায়াবী চোখের চাহনি অবলোকন
করতাম,ওর প্রতিটি চাহনি আমার হৃদয়ে কাশ
ফুলের নরম ছোঁয়া হয়ে প্রতিফলিত হতো, তখন
থেকেই  প্রত্যহ একটা অজানা আবেশে তাকে দেখি।


এসেছিল উপস্থাপনা শিখতে, কিন্তু আমি তাকে নিয়ে
গিয়েছিলাম কবিতার রাজ্যে, ভোরের শিশিরের ন্যায় কোমল সে রাজ্য, গোলাপের পাপড়ির ন্যায় স্নিগ্ধ তার চারপাশ, সেই থেকে হলাম আমি তার কবি গুরু, তার কাব্যসুধা পানের পেয়ালা। কবিতায় হয়তো আমি  রবীন্দ্র নই যে তাকে নিয়ে উড়বো বলাকার ডানায়; জীবনানন্দ নই যে তাকে ডাকবো কোমল স্বরে নাটোরের বনলতা সেন।


তবু কেন যেন সে আমার কাব্যজগতে বলাকা হয়ে উড়তে চায়; পাখির নীড়ের মতো চোখ তুলে হতে
চায় নাটোরের বনলতা সেন, হতে চায় উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের সেই কালো প্রেমিকা যে সহস্র বছর
ধরে বেঁচে থাকবে শেক্সপিয়ারের অমর কবিতায়।