জব্বার সাহেব মান্যগণ্য লোক,
সমাজে বিচার আচার করেন,
ন্যায়বিচারক বলেই জানে সবাই।
সেদিন যখন তিনি শমসেরের বউ
শর্মিলাকে অবিবাহিত আজমের
সাথে জ্বিনা করার অপরাধে গ্রামের
সালিশ বৈঠকে  একহাত পাচন দিয়ে
সোল্লাসে পিটাচ্ছিলেন, তখন সেই
সালিশে উপস্থিত দর্শককূল, যাদের
অধিকাংশই সমাজের ক্ষমতা কাঠামো
এবং তার প্রয়োগ ও অপপ্রয়োগ সম্পর্কে
ধারণ রাখে না, বিজয়ের উল্লাস করে, 'আরো
মার, আরো মার' বলে জব্বার সাহেবকে শক্তি
জুগিয়েছিল।


একদিন জব্বার সাহেব চুরির বিচার করতে
যেয়ে মারতে মারতে  কথিত চোর আলিমের
হাঁটুর মালাটাই ভেঙে ফেলেছিল! সেদিনও
তাঁর সাথে ছিল উৎসুক দর্শককূলের বাহবা
এবং হাততালি। ক্ষমতার এমন অপপ্রয়োগ
করেই কিন্তু জব্বার সাহেব সমাজের দেবতা
হয়েছিলেন; হয়েছিলেন ন্যায়বিচারের মুখোশ
পরা মূর্তপ্রতিক। সাধারণ দর্শককূল তা বুঝতো
না, তারা বুঝতো না ন্যায়ের এই মিথ্যা মূর্তি ধারণ
করেই যে তিনি টিকে আছেন, এই মূর্তি ধরেই যে
তিনি অসহায়ের শেষ সম্বল বসতভিটা দখলে নেন,
এই বেশেই যে তিনি সরকারি খাল ভরাট করে উচ্চ
দালান তৈরি করেন, এই রূপেই যে তিনি ঘরের অবলা
বউকে পিটিয়ে জখম করেন; সেই অবুঝ দর্শককূল তা
বুঝতো না।


একদিন ভরদুপুরে তাঁরা দেখলো, তাদের সর্বজন শ্রদ্ধেয়
জব্বার সাহেবকে পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে  নিয়ে যাচ্ছে,
বাড়ির সেই নির্যাতিতা অবলা বউ কারণ জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বলেছে, উনি রইসুদ্দিনের নয় বছরের স্কুল
পড়ুয়া ফুটফুটে  মেয়ে রানুকে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণ করেছে!