(২)
আসে জোয়ার ফিরে ভাটায় দিনের পরে রাত।
চলে সবাই আপন গতি নাই তো কারো হাত।।
সুখের পরে দুখ যে আসে হাসির পরে ব্যাথা।
শীতের শেষে ঝরে যেমন সকল গাছের পাতা।।
চললো ক’দিন প্রেমের জোয়ার সেদিন সাঁঝের বেলা।
মণির মায়ে দেখলো সবই এই কি ছেলে খেলা।।
ঝড়ের মত এসেই মায়ে ধরলো মণির হাত।
মা-কে দেখে মণির পেটে হজমে গেছে ভাত।।
লজ্জা শরম নাই কি তোমার কূলের মেখে কালি।
দেখলে লোকে হল্লা করে হাতে দেবে তালি।।
কোথায় তুমি মোড়ল জাদী কোথায় বা সে চাষা।
তারি সাথে মন মিতালী কেমন তোমার আশা।।
তোমার বাপে যদি জানে কি যে হবে হাল।
ফাঁসি দিয়ে মারবে জানা সব হবে পয়মাল।।
শোন বলি রাখাল ছেলে শোনো দিয়া কান।
আকাশ কুশুম স্বপ্ন তোমার ভেঙ্গে হবে খান।।
আসবে না আর এই না পথে বাজবে না আর বাঁশী।
আপন হাতে দিও তব স্বপ্ন গলায় ফাঁসি।।
সকল কথা রাখবে স্মরণ না হয় যেন ভুল।
মাঠের চাষা মাঠেই রবে জঙ্গলি ফোটা ফুল।।


দিনের রবি অস্ত যাবে সাঁঝের আয়োজন।
বনে বনে বিহগ কুলে আনন্দ কূজন।।
দুর ভাসে আজান ধ্বনি মোয়াজিনের সাড়া।
এসো মোমিন পড় নামায করে সবে তাড়া।।


রাতের খানা শেষ হল তো বসলো মোড়ল ঘর।
পান দিয়ে যাও ও মণির মা, ডাকে মধুর স্বর।।
পানটা হাতে দিতে তখন মণির মায়ে কয়।
আমার আছে একটা কথা শুনিবে নিশ্চয়।।
কোন কিছুর নাই কি খেয়াল বাড়ছে মেয়ে ঘরে।
বিয়ে শাদীর কথা কি নাই রাখবে এমন করে।।
মণির আমার বয়স কত এই না হল ভোর।
তাই নিয়ে আজ করছো কেন তুমি এত শোর।।
শোর করি না শোর করি না শোন দিয়া কান।
ক’দিন পরে বুঝবে ভালা যাবে যখন মান।।
রাখাল সনে মন মিতালী তোমার মেয়ের কাজ।
নিজের চোখে দেখছি তাহা সাঁঝের বেলা আজ।।
শুনে কথা গরজে উঠে সিংহ বনের রাজ।
মৌচাকেতে ছোঁ মেরেছে যেন চতুর বাজ।।
কোন সে রাখাল সাহস এমন কি বা তারি নাম।
আপন কুলের নাই কি খবর ভুতের মুখে রাম।।
কাল সকাল দেখবো তারে দিবো এমন সাজা।
ভুলে যাবে সাত পুরুষ নাম বুঝবে রাখাল রাজা।।


(চলবে)