হাওরের বুকে ভেসে বেড়ায় পালঙ্ক প্রতিম নৌকা
তাহাতে বসে খুঁজি আমি আলতো জলের টোকা ৷
উত্থিত জলের ঝাপটায় স্বপ্নের  স্নানে ভাসি
মুহূর্তেই স্বর্গীয় ঝর্ণার মাঝে আমি উচ্ছ্বাসে হাসি ৷
শ্রাবণের কালো আকাশের নিচে হাওর হয় উত্তাল
নিজেকে সামাল দিতে না পেরে আমি হই মাতাল ৷
প্রকান্ড সব ঢেউয়ে আমাদের নাও হয়েছে পাগল
পাটাতনের উপড় দোদুল্যমান আমরা হয়েছি স্বজল৷
প্রাণপণ চেষ্টায় মাঝি সামাল দিচ্ছে নৌকার হাল
ততক্ষণে আমরা বেঁচে থাকার প্রার্থনায় বেসামাল ৷
আকাশ হতে মেঘ ঝরছে সিন্ধুর মত হাওরের বুকে
কূল হীন মাঝি ও তার অসহায় সঙ্গীরা আছে ঝুঁকে৷
জীবন এখন শাঁখের করাতে দুলছে অবিরাম
পালঙ্কে যাত্রীরা করছে স্রোতের সাথে সংগ্রাম ৷  
অকূল জলীয় প্রান্তরে যায় দেখা এক দ্বীপসম গ্রাম
অকূল পাথারে দিচ্ছে উঁকি এই রক্ষাকবচ গ্রাম ৷
দীর্ঘ সংগ্রামী উত্তাল পথ বেয়ে পা দিলাম মাটিতে
মনে হলো আমরা নৌকাবাসীরা ফিরেছি দুনিয়াতে ৷
ভাসমান এই সবুজ গ্রাম যেন প্রকৃতির আধার
হাওরের  সৌন্দর্য আমার মন খারাপের আহার ৷
গ্রামকে ঘিরে রাখা বিস্তীর্ণ জল রাশিতে আছে মোহ
সেই স্রোতের দিকে তাকিয়ে পাই হারানোর আবহ ৷
মৃত্যুর যন্ত্রণাসম নরক থেকে স্বর্গে পেয়েছি ঠাই
অমঙ্গলের পর আসে আনন্দলোক এই শিক্ষা পাই ৷
এবার যাত্রা স্থলে ফিরে যাবার সময় এসেছে দ্রুত
রাখব জড়িয়ে এই অসীম স্মৃতি এ আমার ব্রত ৷