ঘাসফড়িং ছুটত স্বপ্নের ডানায়,  
মিঠে কাগজে লিখি চিঠি অজানায়
“রোদে রাঙা হোক আমার পৃথিবী,  
তালপাতার ছায়ায় বিষাদ হারাবি।”  

ছেঁড়া কাগজে মাখা আলোর আদর,  
নদীর ঘাটে বাঁধা হৃদয়ের সম্ভার,  
ঝর্ণার সুরে কাঁদে বাঁশির কলতান,  
শৈশবের দিন, সে তো অনন্তের প্রান।  

পাটকাঠির নৌকা ভাসে স্রোতের কোলে,  
গরুর গাড়ির ধুলো মেশে আলোর দোলে,  
বালির বাড়ি গড়ে ছায়ার সাথি,  
হারিয়ে যায় সব; শুধু আমি, নির্জন পথী।  

মাটির ছাদে উড়ে রঙিন ঘুড়ির স্বপ্ন,  
বাতাস ডাকে, “চলো, দূরে যাই অপরূপ!”  
এক পায়ে হেঁটে ছন্দে গানের মেলা,  
তালের ছায়ায় রোদে জ্বলে প্রাণের খেলা।  

পুকুরপাড়ে কুয়াশার নরম আঙিনা,  
চুপিসারে রাত নামে ঘাসের কান্নায়,  
পাখির ডাক এখন নিঃসঙ্গ সুরের ধ্বনি,  
বুকের গোপনে জমে স্মৃতির রাগিণী।  

ঝুম বৃষ্টিতে দাঁড়াই একা, ভিজে আঁখি,  
সে দিনের শব্দ কি এখনো বাকি?  
চিঠিটা পড়েনি কেউ, হয়নি প্রাপ্ত,  
তবু বুকের ভূগোলে তার অগ্নিসাক্ষী জাগৃত।  

নেই কোনো ঠিকানা, নেই কোনো নাম,  
তবু চিঠি ফেরে ঘুরে, স্মৃতির ডাক নিয়ে ধাম,  
“ভুলে গেছিস কি সেই বালির মাঠের মেলা,  
বিকেলের সবুজে ছড়ানো রঙিন খেলা?”  

ধূপছায়া ছুঁয়ে হঠাৎ এক মায়াবী দিন,  
চিঠি খুলে পড়ে, জাগে হৃদয়ের চিন
যে ছিলাম আমি, সে আজ নিভৃত নীরব,  
হারানো শৈশব, সে তো অনির্বাণ স্বপ্নের রব।