নীলঘাসের দেশে এক দুপুর থেমে আছে চুপ,
মেঘের ছায়ায় লুকায় কিছু অব্যক্ত রূপ।
বাতাসে দুলে ওঠে ঘাসফড়িংয়ের সুর,
হয়তো সে জানে কোথায় হারায়েছিলেম আমরা একদা, দূর...

একটা পথ ছিল, জবা গাছে ঢাকা,
হেমন্তের ছায়ায় সেই পথ আজও আঁকা।
তুমি কি হাঁটো সেখানে? নাকি স্মৃতির ছায়া তুমি?
তবুও সে পদচিহ্ন পড়ে আছে কোমল ঘাসে
আলতো হাওয়ার একান্ত জমি।

জলছবির মতো ভেসে আসে তোমার মুখ,
সূর্য ঢলে গেলে রঙ বদলায় ওই দিগন্তের সুখ।
হয়তো কোনো গোধূলি— ঝরে পড়ে চোখের পাতা,
হৃদয়ের ভিতর খেলে যায় সুনীল পাতার কথা।

প্রকৃতির বুকজুড়ে কেমন এক স্নিগ্ধতা জাগে,
যেন তুমি বসে আছো মৌন বাতাবিলেবুর ছায়ায় ভাগে ভাগে।
ফুলে-ফুলে গন্ধ, ঘাসে-ঘাসে রূপ,
তবুও কোথায় যেন নিঃসঙ্গ এক শব্দহীন ক্ষুদ্রতর কূপ।

বাঁশবনের ফাঁকে ফাঁকে কুয়াশা জাগে ভোরে,
তুমি নেই— তবু তোমার ছায়া খেলে খেয়ালী করে।
যতবার হেঁটেছি ঐ মেঠো গোধূলি-রাস্তায়,
বুঝেছি, প্রকৃতি তোমারই ভাষা,
তোমারই প্রেম, তোমারই পরশ
আমার হৃদয়ের ছায়াপথে স্থায়ী নিবাস গাঁথায়।

নীলঘাসের দেশে ফিরে আসে প্রতিদিন
এক অচেনা প্রজাপতি— হয়তো তুমি— নীরব, অচিন।
হৃদয়ে রেখে যাও এক অদৃশ্য সন্ধ্যা-চিহ্ন,
যা মুছে না কখনো
মেঘে-ছায়ায়, বাতাসে, পাতায়,
তোমার নামেই প্রতিটি ঋতুর পুনর্জন্ম চিহ্নিত হয় নিঃসীম নিঃসরণে।