দায়িত্ব
গদ্যকবিতা
সত্য অবলম্বনে নির্মিত


দেখতে দেখতে কেটে গেল দীর্ঘ আটষট্টিটি বছর
কখন যে জীবনের শেষ দোরগোড়ায় এসে দাঁড়িয়েছি তা বুঝতে পেলাম না!
সংসারের কলকব্জার ঘানি টানতে টানতে আজও দায়িত্ব ও নীতি আমায় ভীষণ কাঁদায়
কাদায় আমার রক্ত ও শেকড়ে আচ্ছাদিত প্রাণ
কখনো কখনো রক্ত স্বার্থপর হয়ে ওঠে
আমার পছন্দ ও পরিশ্রম তখন নিরর্থক মনে হয়
আর ভালোলাগা তখন জলাঞ্জলি দিয়ে কেমন জড়ো নিথর দেহ আছে প্রাণ নেই নিস্পন্দন এর মত বুকে পাথর চাপা দিই
ভাবনাকে তখন কালের বশে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করি
আর স্বপ্ন ও মনের ক্ষুদ্র প্রত্যাশাকে স্থানান্তরিত করি হৃদয়ের গলিতে।।
রক্তের শিরায় টান ধরে প্রকোষ্ঠে ক্ষরণ নির্গত হয়
তবু বুকে পাথর চেপে ভালো থাকার মিথ্যে অভিনয় করি
অভিনয় করতে করতে শেষ প্রান্তে এসে বড্ড ক্লান্ত অনুভব করি
মনের অন্তরালে প্রলাপ বিনিময় শেষে মস্তিষ্কে বিকৃত মনে হয়
কিন্তু দায়িত্বের বোঝা থেকে কিছুতেই বিরতি নেই
সিঁড়ির ধাপের মত অতিক্রম করে
দেহের কলকব্জা পেরে না উঠলেও বিবেকের তাড়নায় শেষে আমাকে সেই নীতি প্রতিনিয়ত পালন করতে হয়।।
যতক্ষণ প্রাণ আছে সে যে করতেই হবে শরীর ঠিক রাখার জন্য
নয়তো যে শেষ দোরগোড়ায় ঘৃণা লাঞ্ছনা সহ্য করতে হবে
আর নয়তো শেষ পরিণতি বৃদ্ধাশ্রম
কিন্তু আমি তো তা চাই নি
কেননা ওই ভদ্র বেশি শিক্ষিত লোকের মুখোশ খুলে যাবে
আত্মসম্মান হানি যে চাইনি
তাই বুঝি দায়িত্ব কথাটাও জীবন থেকে শেষ হবার নয়
শেষে চিতার ভস্মে ভস্মীভূত হবে সেই প্রতীক্ষায় আছি।।