মাষ্টার মশাই কেমন আছো তুমি…
লিখছি তোমায় আজ ডায়েরীর পাতায়…
আজ তোমার জন্মদিন,
তুমি জানবেওনা বর্ষার খেয়ালী বাতাস আর,
হেমন্তের প্রথম কুয়াশার মনে আমি আজোও তোমার ছবি আঁকি…
জানিনা কেন এত যুগ পরেও তোমার কোন আকর্ষণ বিনিদ্র করে...
জানি আমি সেই মেয়ে,
যাকে টিউসনের ক্লাসে দেখতে না পেলে
মন উচাটন হতো তোমার।
তখন ছিলাম আমি তেরোর ঊষা।
বুঝতামনা ওই চোখে নীলাকাশ!
আসলে আমাদের বয়সের ফারাক এতো বেশী
তাই বোধহয় বুঝিনি তোমায়,
আজ তোমার প্রতিটি কথার মানে লিখতে পারি,
ভাব সম্প্রসারণ করতে পারি ভুল ছাড়া।
সেদিন তোমার বোনের বিয়েতে আমাকে বাড়ি পৌঁছাতে এসেছিলে,
রাত তখন এগারো।
একটা চাঁদ আমাদের সাথী হয়েছিলো।
বললাম মাষ্টার মশাই আজকের দিনে
তুমি সাথে কেন এলে।
আমি যেভাবেই হোক ফিরতাম...
তুমি বললে সামনে পরীক্ষা, তারপর তুমি আমি
আর রইবে দুটি পথ দুই দিকে!
আর আসবেনা জানি নিত্য।
বাকি কথা থাক শব্দহীন, তার অর্থ জানতে চেওনা।
আরো বললে এখন তুমি বুঝবেনা, আজ আমাদের
শেষ পথটুকুতে দিলাম জীবনের কিছু প্রহর…
ঝুকে রয় চাঁদের হৃদয় সেই ক্ষণে, আমি নির্বাক!
তারপর নীরবতা… তোমার চোখ দেখতে পাইনি
ঝাপসা আঁধার সেটা লুকিয়ে দিয়েছিল !
একটা রুমাল বের করে চশমাটা মুছলে।
বিশ্বাস করো সত্যিই সেদিন তোমার কথা আর কষ্ট
আমার কাছে ছিলো দুর্বোধ্য...
আজ তোমার সব কথার মানে পড়তে পারি।
গোলাপের পাঁপড়িগুলো আনমনে একটা একটা করে ছিঁড়লে
তুমি বারণ করতে… তোমার অবাধ্য হয়নি কক্ষনো।
আজ সারা দেহে আমার নির্মম আভিজাত্য
আমার প্রাসাদে চাঁদের আলো লজ্জা পায়,
কাঁধের উপর শক্ত চাবির গোছা...
আমার শক্ত ঘাড়ে খুব মানায় সবাই বলে,
আজ তবু হৃদ পাপড়িগুলো অসুস্থ... ঝরে পড়ে একে একে!
মাষ্টার মশাই তুমি সব কথার অর্থ সুন্দর প্রকাশ করতে,
কিন্তু তোমার মনের কথা ছিল অধরা…
তোমার মুখ আজ গোধূলির পড়ন্ত আলোকে ভেসে যাওয়া
মেঘের মাঝে দেখলাম,জন্মদিনে।
আজ মন উচাটন,
যদি কভু দেখা হয় আরবার, ক্নান্ত চাঁদের নিচে...
মাষ্টার মশাই... মানে বলে দিও এ জটিল পথের!