দিন শেষ হয়ে এলো
সূর্যি অস্ত গেলো
কেগো মা বসে আছো?
ঘাটকে করে আলো।
বহুদিন এই নদীতে
বাই আমার নাও,
কোথায় মাগো হবে যেতে
আমায় বলে দাও।
একটু পড়েই আঁধার হবে
নদী হবে কালো,
অমাবস্যা আজযে মাগো
যাবেনা দেখা ভালো।
কত বিপদ ঘাট জুড়ে
জানোনা ঠিক তুমি
তাড়াতাড়ি পৌছে দেব
ঠিক ঠিকানায় আমি।
মা শুনে কন হাসি মুখে
পূজো রাতে আছে,
অচিনপুর গাঁয়ের ঘাটে
কালি বেদীর কাছেl
সকাল হতে আছি বসে
যাব সেই গাঁয়ে,
প্রতীক্ষায় নদী কুলে
কেউ নিলনা নায়ে।
পারের কড়ি নেইযে বাবা
বলবে কি উপায়?
মিটিয়ে ঠিক দেবো ঋন
সেথায় মন ধায়।
মাঝি কহে এসো বসো
নয় বেশি কাল,
সারাদিনতো অনেক বাহি
পেটের তরে হাল।
পৌঁছে দেবো ঠিক মাগো
অচীনপুরের গাঁয়,
পারের কড়ি নাইবা দিলে
বাইব আমার নায়।
মা কহে তৃষায় মরি
একটু ত্বরা করো,
গলা বুঝি য়ায় শুকায়ে
গরম আজ বড়ো।
মাঝি কয় বসো তুমি
আসন দিলাম পেতে,
জল বাতাসা নাও মাগো
আচঁলখানি পেতে।
আমিযে মা গরীব বড়ো
সামর্থ আর নাই,
আদর করে নাও তুলে
এইটুকুই সঞ্চয়।
ঘরে আছে অভাব বড়ো
গরীব সাত কুলে
বউ বাচ্চা তাতেই সুখী
খুশিতে রই ভুলে।
দিনের আলো ফুরিয়ে গেল
কালো রাত্রি ধায়,
মাঝি তাহার নাও খানি
আপন মনে বায়।
মা বলেন জ্বলছে দীপ
ভীড়াও সেথায় নায়
ঐখানেতে আছে পূজো
অচীনপুরের গায়l
আশীর্বাদি ফুল আমার
খুশিতে রেখো তবে,
এ জীবনে আর তোমার
কষ্ট নাহি রবে।
মাঝি তখন কিযে ভেবে
জ্বাললো দীপখানি
নিমেষেতে হলো সোনা
মাটির প্রদীপখানি।
ঝলসে উঠল নায়ের ভিতর
মণি মুক্তা শত।
মিটিয়ে দিয়ে গেল মাযে
ঋণের বোঝা যত।
মাঝি তখন উঠে কেঁদে
একি ভাগ্য হায়,
ধরতে আমি পারিনে যে
চিনিনি তোমায়।