এইখানে এই বাতায়ন পাশে কাটে সারাটা বেলা
বাইরে দোরে আছে বারণ করিনে কোনো খেলা
এসোগো সবে বাতায়ন পাশে আছে গল্প কথা
বলে খোকন কাটবে সময় আসবে যখন হেথা
ডাকে খোকা কে যাওগো ঘোমটা মুখে দিয়ে
তপ্ত পথে ক্লান্ত চরণ যেও জিরিয়ে নিয়ে
ঘোমটা মুখে গ্রীষ্ম আমি তপ্ত আগুন ঝড়া
অগ্নি স্নানে পাপ ধুয়াই স্নিগ্ধ করি ধরা
কেনো বাছা ডাকো মোরে আদর সোহাগ ভরে
আছে মোর বহু কাজ সারা দিনের তরে
দিলাম এ ফুলের সুবাস প্রখর রোদ কিছু
ছড়াবে তোমার যশখানি ঠিক তাদের পিছু
এইনা বলে ঋতু কন্যা ছুটতে সুরু করে
খোকার মুখের মিষ্টি আদর নিয়ে গেলো ভরে
বর্ষা এলো আকাশ জুড়ে কালো মেঘের ঘটা
তারই মধ্যে রামধনুটা দিয়ে গেলো ছটা
ডাকলো খোকা বর্ষারানি একটুখানি এসো
মোর দাওয়ায় আজকে তুমি একটুখানি বোসো
বলছো আমি বর্ষারানি শুনতে মধুর শোনায়
দিনভর রিমঝিম নেচে আমি বেড়ায়
এখন আছে অনেক কাজ আসবো অন্য সময়
রামধনুর মুকুট দিলাম ডেকোনা পিছে আমায়
এইনা বলে ঋতু কন্যা চলতে সুরু করে
খোকার মুখের মিষ্টি আদর নিয়ে গেলো ভরে
দেখতে দেখতে শরৎ এলো আগমনী ভরায়
দিঘির পারে কাশের ফুলে বার্তা বুঝি ছড়ায়
শিশির প্রভাত শিউলি সুবাস অঙ্গে শরৎ মেখে
ছোট্ট খোকার মধুর ডাকে থমকে গেলো দেখে
বলে শরৎ খোকোন সোনা বসার সময় নাই
আছে পরে অনেক কাজ কি করি উপাই
সাদা মেঘের খেয়া বেয়ে যাব আমি সুদূর
দিয়ে গেলাম হৃদয়ভরে আগমনীর সুর
এইনা বলে ঋতু কন্যা ছুটতে সুরু করে
খোকার মুখের মিষ্টি আদর নিয়ে গেলো ভরে
পাতা ঝড়ার মাঝে এলো হেমন্ত শুষ্ক কাল
চাষীর ঘরে নবীন ধানে খুশিতে সবাই মাতাল
ছোট্ট সোনা আবার ডাকে বাতায়নের ফাঁকে
হেমন্ত রানি ধানের বোঝা তার দুয়ারে রাখে
বলে খোকোন ঘরে তোমার দিলাম সোনার ধান
আজকে আমি যাই এবার কোরোনা অভিমান
রূপশালি এই হলুদ ধানে ঘর দিলাম ভরে
যাবার বেলা দুঃখ চোখে ডেকোনা আর মোরে
এইনা বলে ঋতু কন্যা ছুটতে সুরু করে
খোকার মুখের মিষ্টি আদর নিয়ে গেলো ভরে
মেঠো পথে কুয়াশা গায়ে ডান্ডা জড় কালে
শীতের বুড়ি কেঁপে কেঁপে পথের উপর চলে
শীতের বুড়ি কিছু সময় এসোনা সব ভুলে
হলুদ রোদে ভিজাও অঙ্গ খোকন সোনা বলে
বলে বুড়ি হয়যে দেরী বসার সময় নাই
আসবো আমি তোমার কাছে আজকে তবে যাই
দিয়ে গেলাম শীতের প্রহর যত্নে রেখো তাকে
যখন খুশি পাবে তুমি শীতের মজাটাকে
এইনা বলে শীতের বুড়ি চলতে সুরু করে
খোকার মুখের মিষ্টি আদর নিয়ে গেলো ভরে
বসন্তবালা নূপুর পায়ে ছমছমিয়ে চলে
পলাশ ফুলের লাল মালাটা গলায় তার দোলে!
ছোট্ট খোকোন সোহাগ ভরে ডাকে বসন্ত পরী,
আমার কাছে এসো তুমি নইলে দেবো আড়ি...
বসন্তরানি দুলিয়ে মালা ছুট্টে আসে কাছে,
বলে পরী ব্যস্ত আছি দেরী হয় পাছে,
তোকে দিলাম দখিন বাতাস কবিতা আর গান,
ভুলে যাবি শতেক দুঃখ নাচবে তোর প্রাণ!
এইনা বলে বসন্ত পরী ছুটতে সুরু করে,
খোকার মুখের মিষ্টি আদর নিয়ে গেলো ভরে।
ছয়টি ঋতু ভরে থালা এই পৃথিবী সাজে,
ব্যস্ত থাকে সব সময় নিজ নিজ কাজে।
খোকোন সোনা বুঝতে পরে সময়এরই মূল্য,
সবার চেয়ে দামী সেতো হয়না তাহার তুল্য।।