কীর্তনীয়া গেয়ে চলেন  সভা লোকারণ্য,
    মধুবাবুর  আয়োজনে আসর আজ ধন্য।
ভোজের তরে নজর কড়া মনে জাগে ভয়,
    অতিথিদের অসন্তুষ্টি পাপ বুঝি সঞ্চয়!
গুণীর হেথা কদর সদা এ দেবালয় পুণ্য,
    বিবেক তার সত্যি তাজা ভাবেন সবার জন্য।
শিশির বায়ু  ঢাকে গায়, অবসন্ন পা,
    ক্লান্ত চাঁদ ঢুলে ছোঁয় সবুজ পাড়ের গাঁ।
তবুও চলে বন্দনা তাঁর কি যে জাদু ছোঁয়,
    যত মনের গ্লানি বুঝি চোখের জলে ধোয়।
রাধা পথে উদভ্রান্ত বলেন কৃষ্ণ কই...
    চলার পথযে থমকে গেল মনযে মরে সই।
হরি নামে মাতাল সব আঙিনা ভরপুর,
    মধু হঠাৎ গুমরে কাঁদে তাল কাটা সুর।
কানাকানি করে সব হলো কিযে তার,
    এত সুখে শ্রান্ত বুঝি নুইয়ে রয় ঘাড়।
সভা মাঝে তলব করে কীর্তনীয়ার প্রধান,
    মাতার চরণ পরুক হেথা ওহে বুদ্ধিমান।
মারে দর্শনের তরে উদগ্রীব হৃদয়,
    সভা মাঝে সাধু রব চোখ তৃষ্ণাময়,
মধুর বাক রুদ্ধ রয় শুধু আঁখি বয়,
    দংশনে তার বিবেকখানা যেন চূর্ণময়!
মধু কহে চোখ মোছে নীচু করে ঘাড়,
    ঠাঁই নাই হেথা মার সংসারেতে যার।
মাতৃ ত্যাগী আমি পাপী শূন্য দেবালয়
    সমস্যা আর কলহ তরে বৃদ্ধাশ্রমে রয়…


ঝংকারিত হলো সভা তাল কাটে সুর,
    কি কথা শোনালো মধু মন ভেঙে চূর,
কীর্তনীয়া  বলে মধু বৃথা আয়োজন,
    মন্দিরে দেবতা নাই আঁধারে মগন।
অন্ধ তুমি এ জগতে চিনলেনা ওরে,
    কেমনে বাঁচিয়া রও পাপ রূপ জ্বরে...
কেন তবে এই সভা কোন সুখ হেথা?
    তব মনে কাদা মাখা সবটাই বৃথা,
পিতা মাতা দেব সম ঘর দেবালয়,
    হাল ধরে এ তরণীর দুর্যোগের সময়,
ত্যাজিব এক্ষুণি সভা পাছে পাপ ফিরে,
    তোমার সর্বস্ব দেখি আঁধারেতে ঘিরে।।