সালটা ২০২১, ১৪ই ডিসেম্বর,
রাস্তার পাশে শুনতে পাচ্ছি মাটি ফুঁড়ে আসছে বেরিয়ে অসংখ্য চিৎকার
বলছে বারবার, "পরজন্মে আমি নেতা হবো, নেতা হবো।
তোমরা আমায় রাখোনি মনে?
রক্তের দাম চায়নি কেউ, রাখতে তো পারতে প্রার্থনায় বা স্বরণে?"
বিশ্বাস হয় না! শুনতে পায় না কান?
বলুন তবে ক'জন জানে সাত বীর শ্রেষ্ঠের নাম আর তাঁদের অবদান?
কিংবা পারে কি বলতে আপনার সন্তান
কেবল দু'জন মুক্তিযোদ্ধার গল্প যুদ্ধের গান?
তাদের রেখেছি বন্দী বইয়ের পাতায় নয়তো নেতার ভাষণ
আর শুধু শব্দ "ত্রিশ লাখ শহীদ"-এ।
কে করেছে স্বরণ এতোদিন পরে?
খালে বিলে ডোবায় নর্দমায় পরে থাকা দূর্গন্ধময় লাশ
যাদের ছিঁড়ে খেয়েছে কুকুর শকুনে
কেউ কি রেখেছে মনে?
লিখে রেখেছে কি নাম পাথরের সোপানে?
ক'টা রাস্তায়, ক'টা স্থাপনায় মানুষ তাদের চিনে?
ইতিহাস লিখেছে জাতি নিজের মতো
আজো হয়নি সময় পায়নি স্থান আর কারো দিলে।
আজো ফেরি করে ফিরে মুক্তিযোদ্ধা বৃদ্ধ গাজী
শক্ত খাটে শুয়ে থাকা রহিমা বিবির ঘুম গিলে খায় কোন এক বর্বর পাকিস্তানি।
কে জানে তাদের কথা?
কে দিয়েছে তাদের প্রাপ্য সম্মান?
না দিয়ে ভাষণ যে হারিয়েছে জীবন যুদ্ধের ময়দান
ঘরে রেখে ছোট্ট শিশু আদুরে বুকের ধন,
মেহেদী রাঙা নবপরিণীতা বধুর ছিড়ে বাঁধন,
যে দিয়েছে বিসর্জন নিজের জীবন,
কে রেখেছে তাঁরে মনে?
বাঁচাতে মুক্তিযোদ্ধার জীবন
স্বজ্ঞানে স্বইচ্ছায় নিয়েছে মেনে যে বোন হারাতে সম্ভ্রম
ধর্ষিতা হয়ে সইতে শত্রুর পাশবিক নির্যাতন
গেরিলাযোদ্ধা, চিকিৎসকযোদ্ধা কিংবা কন্ঠযোদ্ধায় কে দিয়েছে স্বীকৃতি?
কেউ রাখোনি মনে!
কে করেছে লালন হৃদয়ের গহীনে?
বিনিময়?
বিনিময় ছিলো শুধু চাওয়া,
একটা দেশ একটা পতাকা আর একটা বাধ ভাঙা চিৎকার "আমরা স্বাধীন।"
১৪/১২/২০২১.
ঢাকা