আপনি যদি মশাই
এ পাড়ায় আমার সাথে কিছুক্ষণ হাঁটেন,
চারদিকে ফিসফিসানি কানাকানির নানান শব্দ শুনতে পাবেন।
শুনতে পাবেন কেউ বলছে, "বেয়াক্কেল", "হাঁদারাম "
"পাগল", নয়তো "আস্ত একটা গেঁয়ো মোরগ"।
এরকম সোজাসাপ্টা নানা বিশেষণ!
ভাবছেন আপনাকে বলবে?
আরে না, ধূর!
বাপের দেয়া নামটা ছাড়াও ওগুলো আমারই অন্য অনেক গুন।


চিন্তায় ফেলে দিলাম! ভাবছেন মশাই, কেন!
কারণ, ওদের ধারনা আমি একটা দুগ্ধবতী গাভী
আর যে ঘরে আমি থাকি!
ঘরটা আমার হলেও ওদের কাছেই ঘরের চাবি।
ওরা রোজ কোন না কোন বাহানায় খসাবেই আমায়,
কারো বিপদ, কারো মেয়ের বিয়ে, অসুস্থ্য,
কারো নাকি আজ ঘুরেনি রিকসার চাকা!
আর আমি ঐ বিশেষণ গুলোর মতোই সরল বিশ্বাসে
বেতনের ক'টা টাকা থেকেও করে দেই দান সদকা।
বাজারের হারু মাছওয়ালাও বোকা পেয়ে ছলেবলে
বেশি দামে পঁচা মাছ-ই গছিয়ে দেয় আমার থলে।
মসজিদের পাশে ঐ হাসু মুচি!
আজ বাজার হয়নি বলে সেও পয়সা চায় চুপিচুপি।
দুধ ওয়ালাও মাপে ঠকিয়ে পয়সা নেয় কৌশলে,
আর ঐ বাসার পাশের মুদির দোকানদার!
সেও আমার বিশ্বাসের সুযোগটা ভালোই লাগায় কাজে
দামটা একটু বাড়িয়েই বলে।
বউ অবশ্য সবার সামনে আমায় কিছু বলে না,
কিন্তু একা পেলে সেও ছাড়ে না,
ঠিক লাগিয়ে দেয় বিশেষণ, হয় বোকা নয় গাধা
হাহাহা.....!


এতক্ষণে আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন মশাই,
আমি সত্যি একটা গাঁধা, না-হয় এতকিছুর পরও মানুষ হাসে?
এতো হাসি আসে কোথ থেকে!
রহস্যটা তাহলে আপনাকেই বলি,
আমি আসলে এসবের আড়ালে পাক্কা এক সওদাগর,
কেউ জানে না! ব্যাংকের ভল্টে আমার লক্ষ লক্ষ টাকা!
সেখানে রোজ আরো কিছু না কিছু করি জমা
লক্ষ্য একটাই আমার,
এসবের বিনিময়ে সবার আগে জান্নাতে কিনবো সুন্দর একটা ঘর।


১০/৪/২০২২
চট্টগ্রাম।