দুঃখ আমার নিত্য দিনের
দুঃখে ভয় নাই,
দুঃখ হলো পথের পাথেয়
দুঃখ করিনা তাই।
দুঃখ আমার মেঘলাকাশের
মেঘে ঢাকা তারা,
সেইখানেতে নিত্য বসি
করছে ইশারা।
দুঃখ যে মোর প্রিয়হারা
বাঁশরিয়ার সুর,
নির্ঘুম রাতে ভাবছি বসে
বেদনা কত মধুর।
দুঃখ আমার কৈশোর বেলার
ছুটাছুটি বেহিসেবী খেলা,
কোথাও খুঁজে পাইনি'ক এমন
শান্তি সুখের মেলা।
দুঃখ যে মোর চির সাথী
দুঃখ যে এক রোখা,
আপন ভাবি যাদের আমি
তারাই দিল ধোঁকা।
দুঃখ যে প্রথম যৌবনের
বিরহ গাঁথা গান,
তারি লাগি হৃদয় সদা
করে যে আনচান।
দুঃখ আমার কাজলা বঁধু
বাসরে শয়ন,
তাই-তো আজি দুঃখটাকেই
করছি আলিঙ্গন।
দুঃখে পড়ে কাঁদছে বসি
নব ঋতুবতী,
ছলনায় পড়ে ভাগ্যে মিলে
দুঃখ দিবারাতি।
দুঃখে পড়ে ঝরছে আঁখি জল
পল্লী গাঁয়ের বধুর,
গায়ের জোরে নিল পাকনা ফসল
সমাজপতি সুদখোর।
দুঃখ যে হায় পথের শিশুর
বাবা মা হারা'র কান্না,
একটা দুটো রুটির তরে কাঁদে
সুখীজন দেখেও তা দ্যাখেনা।
তিমির রাতে ঝড়ের ফাঁদে
বিহঙ্গিনী একলা কাঁদে,
আকূল হৃদয়ে ডাকছে সাথী
মনে কত ভয়,
তবুও আপন মনে খোঁজছে সদা
দুঃখ যে নির্দয়।
দুঃখ যে হায় পথিক পাগলের
বেসুরো গান গাওয়া,
একমুঠো অন্ন জুটলে হাতে
তাতেই পরম পাওয়া।
সদা দুঃখ সুখের বসবাস
পাশাপাশি বারমাস,
কেন ওরে করছিস তোরা
সুখের লাগি হাহুতাশ।
দুঃখ সুখে দুই জানাতে
যেন জমক ভাই,
দুঃখ লয়ে পূর্ণ আমি
সুখ খুঁজিনা তাই।
দুঃখ টানে দূর-বহুদূর
দেয় যে কান্না হাসি,
দুঃখ যে মোর ক্রন্তি কালের
ঘুম পাড়ানি মাসী।