দাবি   //    রবি


এই আমাকে নিয়েও আজ  মিটিং মিছিল হচ্ছে
যেন সারা দেশ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখাবে এই আমাকেই ।
সাদা পায়জামা পানজাবী পরা কিছু লোকের মাথায় টুপি,
কিছু লোকের মাথা সাদা কাপড়ে মোড়া ।
সামনে পিছনে অনেক লোক আর চতুরভোজি নির্দিষ্ট চার কুনে চারজনতো আছেই ।
আমাকে নিয়ে আসলে মিছিলটা হচ্ছে কেন ?
তা এখন এই খাটিয়ায় শুয়ে শুয়ে হেলে দুলে অস্তে অস্তে মনে পড়ছে
এক চৈতের প্রখর রোদ্দরে হাঁ করা মাটি ফাঁটা দুপুরে
সারা শরীর কম্বল পেঁচিয়ে শিকল পরা নুপুরে
তিন রাস্থার মুড় এরিয়ে রাজপথ পেরিয়ে ,
ঝঁড়ের বেগে ছুটে গিয়ে ছিলাম সেখানে,
যেখানে কোর্ট টাই পরা বড় বড় মানুষ বড় বড় বাজেট পেশ করে।
সেখানে তো আর আমার মতো শুকনা পেটের মাথা মোটা মানুষ থাকে  না,
যে আমাদের নিয়ে ভাবে, যে আমাদের নিয়ে ভাববে ।
এই গেল তিন দিন আগেও সদরঘাট থেকে হাঁটতে হাঁটতে  
যখন ধানমন্ডির রাস্থা ধরে প্রধান মন্ত্রীর বাসভবনের ধারের কাছে এসে ছিলাম
আমাদের চলমান জীবনের কিছু কিছু সৎত  তথ্য তুলে ধরার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে
তখন আমার সারা শরীর লীক্‌ করা তেলের ড্রামের  মতো
ঘাম ঝরতে ঝরতে যেন হাওয়ায় ভাসে যাচ্ছিলাম ,
ভাবলাম এখন আর দেখা করা যাবে না
আগে নিজের কিছুটা ওজন বাড়াতে হবে
প্রধান মন্ত্রী বলে কথা ,
আসলে শুকনা নাড়িকে একটু পানি দিয়ে ভেজাতে হবে ।
যেই না এক রেস্তুরায় গেলাম পানি পানের জন্য
তাতেও নাকি টাকার প্রয়োজন
বলে কিনা মিনারেল ওয়াটার ,
আমি বল্লাম তাহলে জেনারেল ওয়াটার দেন ,
আমাকে রেস্তুরার কয়জন বেয়াড়া এসে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিল
সেই যাত্রায় বেঁচে গিয়ে ছিলাম ।
তাই একটু দেরি হওয়াতে প্রধান মন্ত্রীর  দারোয়ানের কাছে এসে  
দারোয়ানকে অনেক আকুতি মিনতি,করেও ভেতরে ঢুকতে পারিনি ,
পরে নিজেকে পাগল গন্য করে এক টাকার দুটো কয়েন দিয়ে  
তার কাছ থেকে জানতে পারলাম
প্রধান মন্ত্রী  আজ আকাশে  উড়াল দিয়েছে
শান্তি বাহিনীর এক জরুরি মিটিং-এ,
এ মিটিং শেষে না করে নাকি দেশের মাটিতে পা, ফেলবেনা তিনি।
এদিকে আমার, আমাদের মতো অশান্তহীন
কম্বল পেঁচানো মানুষদের জন্য কিছু একটা করতেই হবে,
ভাবলাম আজ  যখন বাজেট পাশের দিন
আমাদের বিষয় বস্তুটা তুলে ধরি সংসদে, যদি একটু মায়া হয় ।
আমাদের বাজেটতো আর মারসিটিজ্‌ গাড়ি, বসুনধারার বাড়ি, বড় বড় মিষ্টির হাড়ি না ।
আমাদের বাজেট ছোটখাট কোন কাজ করা
দুমুঠো পেট পুরে দুবেলা মরিচ ঢলে পানতা ভাত খাওয়া ,
শরীর আবরনের জন্য দু টুকরো কাপড় পরা
খুলা আকাশের বদলে ছনের ছউনির বেড়া  ।
এগুলোর দাবি জানাতে  যখন সংসদ অধিবেশন চলা কালিন ,
সংসদের ভেতরে প্রবেশ করতে চেয়ে ছিলাম
ঠিক তখনি আমার কথা না শুনে না জেনেই
কালো পোশাক পরা কিছু লোক এসে
আমাকে গুপ্ত চর আর আত্রঘাতি ভেবে ........
তারপর টুস্‌ টাস্‌ কয়েকটা শব্দ


( কিছু বানান ভুল হয়েছে ক্ষমা করবেন )