ছন্দের ধ্বজাধারী আঁতেল কবিগন
আজ এই নবীণা করে যায় বর্ণন ,
মন দিয়ে শোন তার বিবরণ
মিলিয়ে তাহার মননে মনন ।


সে যুগে তোমরা পড়েছ কবিতা
ছন্দ সুধায় মিলিয়ে নামতা ,
বর্ষায় নাকি ময়ুরের কেকা
আজ বৃষ্টিতে বায়ুর সীসা মাখা ।


আজও আকাশে উঠে রবি ঠিকই
রাতের আকাশে তারার ঝিকিমিকি ,
কিন্তু বায়ুর ক্ষয়ে যাওয়া স্তর চুয়ে
অতি বেগুনী রশ্মি প্রকৃতিকে যায় ছুঁয়ে ,
বাড়িয়ে তোলে পৃথিবীর উত্তাপ
গলায় মেরুর বরফ জমাট ।


এখনো বাগিচা আছে কিছু বটে
আজ সেখানে গ্লাডিওলাস ফোটে ,
শোভা যত না বাড়ায় বাগানে
গোড়া কেটে এনে বিকোয় দোকানে ,
সে কাননে আর কুহু ডাকে না
প্রেমিক হৃদয় আকুল করে না ;
বিরহী আজ আর কাল গুনে কাটায় না
পথ চেয়ে সময়ের অপচয় ঘটায় না ,
একটা গেলে
আরেকটা মেলে ,
অতি সহজেই দেশ কাল ভুলে  ,
বৃদ্ধাঙ্গুলির ইশারায় দুনিয়া চলে
আব্দুলের মন কাঁদে না, সকিনা চলে গেলে
বাটনের এক ক্লিকে
ধরে ক্লডিয়াকে ,
বাংলার আব্দুল , ব্রিটিশ ক্লডিয়া
মিলে মিশে গড়ে সুখের দুনিয়া ।


নদীরা আজ বয়ে চলে না কল কল কল রবে
নদীর স্রোতধারা আটকে দিয়েছে টিপাই ফারাক্কা বাধে ,
উজানে বসে সেচের ফসল ফলাও তুমি
ভাটির জমি আজ ক্ষরায় মরুভুমি  ;  
বৈরী প্রকৃতি মিতালী ভুলে সেজেছে রণ সাজে
কি করে বাজবে ছন্দ সেখানে জীবনের বিনা মাঝে ?


জীবনের যত গভীর আকুতি
ছন্দের ফেরে হারায় সে গতি ,
দুঃখকে করে ছন্দ চপলা
শুধুই পাতা উলটে চলা ,
গভীরে বয় না অনুভবের নদী
বেদনায় ছন্দ জুড়ে দেয় যদি ।


রবিবাবুকে স্মরণ কর  
মন্দ সেতো নয়,
তাকে হৃদয়ে ধারণ কর
সেও তো বারন নয়,
কাব্য সাধনায় তাকে অনুসরণ
না করিতে মতি হয়,
রবিবাবু ভবে একটাই রয়  
দ্বিতীয় রবির হয়ে যায় ক্ষয় ।
যতই তাকে মাথায় নিয়ে নাচ, কাকা  
নিজের পরিচয়ই পড়বে তাতে ঢাকা ।


তাই তো রোহিণী ,  
প্রথম রোহিণী
দ্বিতীয় রবি নয় ,
অন্যের অনুসারী হয়ে করে না
মেধার অপচয় ।


একদিন তোমরা দেখে নিও সবে
রোহিণী নামটিও অমর হবে ,
রবি রোহিণী পাশাপাশি রবে
আপন মহিমায় ভাস্বর হবে ,
সুদুর গগনের উজল তারা মাঝে
জ্বলবে সে তারা সকাল সন্ধ্যা সাঝে ।
তোমরা সকল রবি পূজারী/পূজারিণী    
রবির পাশাপাশি পূজবে রোহিণী  ,
কিন্তু দেখে নিও আবহকাল জুড়ে
তোমরা রয়ে যাবে ধুলো মাটি আঁকড়ে ,
পুরানো রবি আর নতুন রোহিণী
স্বর্গ লোকে গড়বে নতুন কাহিনী ,
পুরানো আতরে আধুনিক কেঞ্জো মিশিয়ে তারা করবে জলকেলি,
তোমরা তখনও আকাশ পানে তাকিয়ে রবে কেবলই ।



(আর রবি রোহিণী পাশাপাশি রয় , কথাটি নিয়ে নিশ্চয় আপনাদের মনে বেশ বিতর্কের ঝড় উঠবে , তাই বলে রাখি , প্রত্যেক কবির মনেই সুপ্ত বাসনা থাকে কালজয়ী হওয়ার । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও '  ১৪০০ সাল ' কবিতা লিখেছিলেন , যার কারণে তাকে আজ ভবিষ্যৎদ্রষ্টা উপাধিতেও ভূষিত করা হয় । আমার এই কবিতাটি হয়তো আজ আপনাদের কাছে আস্পর্ধা মনে হতে পারে। কিন্তু যদি সত্যি কোনদিন পরিচিতি ঘটে তখন সবাই বলবে এই ভবিষ্যৎবাণী রোহিণী আগেই করে গিয়েছিলেন । হাহাহাহা। শুধুই একটা চান্স নেওয়া আর কিছু নয় । )