[ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ যা আমি পুরুষ হয়ে পুরুষরুপী ধর্ষক দের জন্য লজ্জিত আর  এর পরবর্তী অমানবিক দিক গুলোও আমাকে প্রতিনিয়তই অস্থির করে বিচলিত করে আমার মনকে। বলতে ইচ্ছে করে... প্রতিবাদ করতে ইচ্ছে করে যে যারা ওই ধর্ষিতা মেয়েটা কে নিতে নোংরা রাজনীতি করে তারাও ধর্ষক। হিন্দু মুসলিম দুই ভাই এর কথার মাধ্যমে যদি আমার উপস্থাপনায় কেউ আঘাত পান আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত। আমায় ক্ষমা করবেন।]


হঠাৎ একদিন সকালের খবরের শিরোনামে
'কোনও এক মুসলিম পাড়ায়
হিন্দুর মেয়ের ইজ্জত যায়।'
প্রতিবাদের ঝড় ওঠে, বিরোধিতার বজ্রপাত হয়
জ্ঞানীরা রাস্তায় নামে, অন্য দেশের পতাকা পোড়ায় ।
মেয়েটা মারা যায় কিছুদিন পরে
বিরোধিতার আন্দোলন মাথা চারা দেয়
কোনও রাতে হিন্দুর ঘর ভাঙ্গে  
লুণ্ঠিত হয় মা-বোনের মান সম্মান, তো;
কোনও রাতে যায় মুসলমানের মেয়ে-বউের মান ।
প্রশ্নেরা ফিসফাস করে আনাচে-কানাচে
ছেলেগুলো মুসলিম না হিন্দু ছিল?
নাকি! মেয়ের চরিত্রে কোনও দোষ ছিল?
রাতের অন্ধকারে কেউ কি দেখেছিল?
দিশাহীন প্রশ্নের অবান্তর যৌক্তিকতা
তবে! কি ভাবে সবাই জানলো সত্যতা!
মেয়েটার ইজ্জৎ নিলো কারা?
জ্ঞানী(রাজনিতীবিদ) বলে সত্য লুকিয়ে থাকে না ।
মূর্খ(পীড়িত মানুষ) আড়ালে বলে রাজনীতিও লুকিয়ে থাকে না ।
দিন যায়, সময় যায়, পরিস্থিতি বদলায়
আর মানুষের মনে সব চাপা পড়ে যায় ।
মূর্খ প্রশ্ন করে জ্ঞানীরে; মেয়েটার মুখ মনে পড়ে?
উত্তর আসে, চোপ হারামখোর
ধর্ম নেই তোর, গরু খাস তুই, খাস তুই শোর।
মূর্খ(পীড়িত মানুষ) জানে, মেয়েটা কী চেয়েছিল;
পশুদের মাথা হেট করে দিয়ে
উন্মত্ত যারা করেছিল নির্মম-অমানবিক অত্যাচার
একা একটা মেয়ের (মা-এর) শরীরে ।
বিচার যেন হয়, শাস্তি যেন পায় তাঁরা ।।
বিচার হয়নি, শাস্তি হয়নি,হয়েছিল লোকদেখানো ধরপাকড়
কিছুদিনের আদলতের কেস, দু দিনের হাজত বাস আর
সামান্য আর্থিক জরিমানায় ধর্ষকরা পেয়েছিল ছাড়।
আর হয়েছিল;মেয়েটা ইজ্জত নিয়ে হয়েছিল আলোচনা
মেয়েটার নগ্ন শরীর আর ধর্ষণের গল্পে
হয়েছিল,ভাইয়ে ভাইয়ে  কাটাকাটি-মারামারি
হয়েছিল নারীর চরিত্র নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুঁড়ি।
জ্ঞানী(রাজনিতীবিদ) বিখ্যাত হয়েছিল রাতারাতি ওই মেয়েটার জন্য,
না হয়ত মেয়েটা ধর্ষিতা হওয়ার জন্য
সাচ্চা হিন্দু-মুসলিম লজ্জিত বোধ করেছিল
নিজেদের পশুর ন্যায় বন্য হওয়ার জন্য।