সারাক্ষণ ভাবি কখন আসবে খোকা কাছে
এসে করবে দাবি টাকা দাও কলেজে যাব ।
কত দিন হয়ে গেল খোকা আসে না,
লক্ষী ছেলে আমার মায়ের কথা বুঝি মনে পড়ে না ।
চারিদিকে গুলাগুলি বোমার কান ফাটানো শব্দ
বাংলার মানুষকে করতে চায় ওরা জব্দ ।
জীবন ভয়ে মানুষ করছে ছুটাছুটি,
রাজাকার উঁচু কন্ঠে করছে খুনসুটি ।


খোকা আমার যুদ্ধে গেছে মরন পণ লড়তে
পাক বাহিনীকে এদেশ থেকে বিতারিত করতে ।
খবর পেয়েছি গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দিয়েছে হায়ানার দল  
অনেককে করেছে লাঞ্ছনা অনেককে করেছে গুলি
দেশ মাতৃকার সোনার ছেলেরা করছে জীবন বলি ।
কত মারবি তোরা আমরা সাত কোটি মানুষের পরিবার,
এবার আমাদের হাত থেকে তোদের নেই নিস্তার ।


রাজাকার আল-বদর আল-শামসদের তান্ডবে  
সোনার বাংলার জমিন পরিনত হয়েছে শ্মশান মন্ডপে ।
খোকার চিঠি এসেছে, দেখি দেখি কি লিখেছে খোকা
মা, আসসালামুয়ালাইকুম, চিন্তা করিও না, আমার জন্য দোয়া করিও ।
আমরা অনেক জায়গা স্বাধীন করেছি, হানাদারদের নিশ্চিহ্ন করে পাঠিয়ে দিয়েছি পরপারে ।
আর মাত্র কয়েকটা দিন অপেক্ষা কর
তোমার ছেলে ফিরবে বীর দর্পে মাতৃভূমি স্বাধীন করে ।

গুলাগুলি থেমে গেল, দেশ স্বাধীন হল
পাক হানাদার এর দল এদেশ থেকে পালাল ।
কত যোদ্ধা আসছে ফিরে মায়ের বুকে
আমার খোকা আসছে না কেন জিজ্ঞেস করি ওদের ডেকে ডেকে,
কেউ জানে না খোকা কোথায়
অন্তরের জ্বালা চোখের পানিতে জুড়ায় ।
খোকা আর আসবে না ।


বুকের তাজা রক্তে লিখে গেছে একটি নাম “বাংলাদেশ” ।
দিয়ে গেছে পৃথিবীর মানচিত্রের বুকে কলমের চিহ্ন ।
১৬ই ডিসেম্বর ২৬শে মার্চে জাতির স্বরণে
তোমরা রবে চিরদিন বাংলার মানুষের মনে প্রাণে ।
মায়ের মন শোকে কাতর হয়ে যায় মুহ্যমান
আবার সান্তনা ছেলে হয়েছে শহীদ মানবের তরে,
ওর কীর্তি গাথা বাংলার জমিনে দুচোখ বুলিয়ে ।


২৬/০৩/২০১৩ ইং, কল্যাণপুর, ঢাকা-১২১৬।