বিন্দু বিন্দু মধুতে যেমন চাক ভ’রে নেয় মৌমাছি
একটি একটি অক্ষরে তেমনি কবিতা নির্মাণ করে কবি
ফোঁড়ে ফোঁড়ে নক্সী কাঁথার কাব্য লিখে যায়
পাড়াগাঁর গর্ভবতী সরলা মেয়ে মানসী,
বিগলিত মেঘ থেকে বৃষ্টি ঝরে ব্যথাবিহীন-
তোমার খোঁপার কাঁটায় রক্ত ঝরায় রাতদিন!


মনে পড়ে দুরন্ত কৈশোরে শরতের কাশবনে
শিশির ভেজা পায়ে দুজন ঘুরেছি কত বন বনান্তর
পথের কাঁটায় তোমার পায়ের ফোঁটা ফোঁটা রক্ত ধারায়
কি অপরূপ সব আল্পনা এঁকে দিত সবুজ ঘাসে ঘাসে,
দুর্বাঘাস চিবিয়ে তোমার ক্ষতে লাগাতাম দ্বিধাহীন-
আজো দেখি সেই সবুজে রক্তচিহ্ন মোটেও হয়নি বিলীন!


ঘাসবনের সেই সবুজ কখনো হয়তো ফিকে হয়ে যায়
কিন্তু তোমার সেই পায়ের ক্ষত বাসা বেঁধেছে আমার হৃদয়ে
হোলদে ঘাসে আবার আসে ঘন সবুজের সমারোহ
কিন্তু-এ হৃদয় ক্ষতে আজো বন্ধ হয়নি দুর্বার রক্ত-ক্ষরণ
জীবন-অপরাহ্নে পাকাচুলে তা হিসেব করি পরাধীন-
দুজনের বিরহে কান্নার যমুনা বহে ধীরে চিরদিন!


এতকাল শুধু স্বপ্ন হয়েই ফিরে গেছ স্বপ্নের রাণী
স্বপ্নের পেয়ে গেছি তোমার সোহাগের খোঁপার কাঁটা
গোলাপের শোভা ও গন্ধে কাঁটার জ্বালা মিশে থাকে
রক্ত-ক্ষরণেও তাই বিমলানন্দ পায় যত গোলাপ প্রেমিক,
নির্বোধেরও বোধ থাকে, বার্ধিক্যেও তাই দুলে ওঠে কোন কোন প্রবীণ-
রক্ত-অশ্রু একত্রে মিশে তোমাতে তা হয়ে গেছে আজ অর্থহীন!