বাংলা,,,,
যতই সময়-দূরত্বে দূরে থাকি
মহাশূন্যের ব্যবধানে,,দূরত্ব যে ততই নিকঠে টানে।
জাগিয়ে দেয় অযুত রসালো বৃষ্টিভেজা প্রেম
আমার মাঝে,,,
আমি সেই প্রেমে সিক্ত হই সাহারায়
আমি সেই প্রেম উষ্ণ থাকি বরফে
বাংলা,,,,যদি কোন দিন আর দেখা না হয়
তোমার সাথে তোমার স্বর্ণ দেশে,,,,
তাহলে ভেবো না,,,তোমার জন্য
আমার বাগানের সব পারিজাত চলে গেছে
পাতালের কালো পথ ধরে নরকে।
ভেবো না তোমার জন্য আমার চোখের জলে
বসে গেছে নালার বালি
ভেবো না তোমার জন্য আমার অন্তর উনুনে
রন্ধিত  হয় না অমৃত পঞ্চ ব্যাঞ্জন,,
ভেবো না তোমার জন্য আমার মন রাধিকা,,,,
যায় না আর আতর কুঞ্জ বনে,,,,


বাংলা তোমার জন্যই যে আমার ঘরের ছায়া
স্বীকার করে নেয় আকাশ ঘরকে,,,
বাংলা,,তোমার জন্যই যে
আমার গায়ে লেগে আছে এখনো মানুষের পরিচয়,,,
আত্মাটাও জেগে থাকে পরশমনি আত্মা হয়ে,,,,।


বিশ্বাস হয় না বুঝি?
বরং চারপাশে যানজটে পড়ে রাগ হয় আমার উপর,,,
অভিমান হয় যখন ইংরেজি,হেন্দি,এরাবিদের সাথে
আমার চায়ের কাপের আড্ডা হয় অহরম দহরম,,,
তখন খুব ঘেন্না হয় তোমার,, আমার উপর,,তাই না?
না গো বাংলা না,,,,,
ওরা আমার প্রতিবেশি,, পথের চারপাশি
ওরা আমার হৃদয় শিরা পথ নয়,,,
ওরা আমার আত্মার বন্দনা-স্তুতি নয়,,,
ওরা আমার হৃদয়ের কারনহীন অনুভুতিও নয়
ওদের জন্য আমার শাপলা মন কাঁদে না,,,
ওদের জন্য আমি কোন পুষ্পপাহাড় স্বপ্ন দেখি না,,,
ওদের জন্য আমি চন্দ্রের সাথে যাই না চন্দ্র দেখতে
ওদের জন্য আমি রাত বিলাসী জোনাকি হই না,,,
ওদের জন্য আমি পদ্ম বিলে ডুব দেই না,,,
ওদের জন্য আমার ঘড়ির কাটা সময় গুনে না,,,
ওদের জন্য আমার বিছানা নকশীকাঁথাও
সজ্জিত হয় না,,সূই সুতায়।
বাংলা,,ওদের জন্য কভু আমার গল্পের নায়ক
নায়িকার কপালে চুমু খায় না,,,।
না না না বাংলা,,, ওদের জন্য
আমার দেবদাস,,, পারু,, পারু,,পারু বলে
চিৎকার করে না।
মহেন্দ্র হয় না রক্তিম গোলাপ,,,
শ্বেত শুভ্র বিনোদিনীর তরে,,,,
ধরে  না  তীর আমার অর্জুন,,,,
কৃষ্ণ,,কৃষ্ণ বলে বেঁচে যায় না আমার দ্রোপদী!
তাই মিনতী করছি বাংলা,,মিনতী করছি
সিন্দুকে আবৃত্ত,,, মহা-পবনসাগরের তলদেশ হতে।
যদি আমার প্রাণ পাখিটা আর না উড়ে বায়ুর চাকায়,,
ভুলে যাবে বুঝি,,,আমায়?
দেয়ালের চিত্রের মাঝে মালা হয়ে ঝুলবে না
কখনোই আমার গলে,,,
তোমার গঙ্গা, যমুনায়,স্থান দিবে না আমার
ছাই ভষ্মের কিবা অস্তি,,র।
আমার নাম শুনলেই মুখ ফিরিয়ে নিবে,,,,?
আমার নাম শুনলেই বোরকা পরে নিবে আপন গায়?
তোমার যে নিত্য নতুন কুড়ি গুলি আসে
ঋতুর পালাবদলে,,,,
তারাও যাবে অকালে ঝরে,,স্মরিলে আমারে?


না,, গো বাংলা না,,,,
তোমার অক্ষর তুলসী তলায়
আমার নামে একটা প্রদীপ জ্বালিয়ে দিও,,,
তোমার শব্দ বাক্য মানবদের বলে দিও,,,
শুধু একটি বার যেন,,আমার জন্য হাত তোলে উপরে।
আর তুমি প্রকাশ্যে না হোক,,,,প্রকাশ্যে না হোক
অন্তত গোপনে,,, হ্যা হ্যা গোপনে,,,
আমার জন্য এক ফোটা জল
তুলে দিও,,,,প্রকাশের হাতে।
দিবেত? ও-ই দেখো না,,,
কত লোক,,,কত ভাবে বলে
স্থানের দূর নাকি,,হয়ে যায় মনের দূর,,,
কিন্তু কই,,তুমি তো আমার নক্ষত্র শিয়রে,,,,
আমার বুকের আল্পনা জমিন উপরে,,,
এ-ই জমিনে জমিনে যেখানেই,, যেভাবেই,,
যেমন শ্বাস নেই,,,
তার নাম লোকে বলে বাংলা,,,
লোকে বলে বাংলা,,,,
লোকে বলে বাংলা,,,,,
আমিও বলি বাংলা,,,,,বাংলা,,বাংলা,,,বাংলা।
হা হা হা,,,,আমার কলমটার নামও
আমি দিয়েছি বাংলা কেবলি বাংলা।
কিন্তু আমার ভয় হয়,,,,খুবই ভয় হয়,,,
আমার ভয়হীন কলমটিকে তুমি চিনবে তো?
ভূমিকম্পের সময় চিনবে তো,,,
সুনামীর সময় চিনবে তো?
একবার,,, কেবলি একবার ডাকবেতো
কলমটিকে বাংলা নামে?
ডাকবেতো, কলমটিকে বাংলা নামে?
##############
রুবেল চন্দ্র দাস
প্যারিস
২০/০২/১৯


(মহান শহীদ দিবস /আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোতে আলোকিত হোক সবার হৃদয়।)