বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি-আমি বুদ্ধের শরণ নিলাম।
ধম্মং শরণং গচ্ছামি-আমি ধর্মের শরণ নিলাম।
সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি-আমি সঙ্ঘের শরণ নিলাম।
- পৃথিবীর সকল প্রাণী সুখে শান্তিতে থাকুক।


বিন্দুসারের ব্যাটার কলিঙ্গের মিথ্যে হা হুতাশ
পুন্ড্রবর্ধনের ধ্বংসলীলা আজও সাক্ষী দেয় ইতিহাস।
হিন্দুকুশ পর্বতমালা থেকে দাক্ষিণাত্যের আশপাশ
অশোকের রোষানল আরো মহান করেছে
        'তথাগতের' ধর্মের নাগপাশ।।
মহিন্দ ও সংঘমিত্রার পুত্র কন্যারা,
সিংহলের ইতিহাসে লিখেছে নতুন ধারা- বিলুপিল্লায়ের নির্বংশকরন।
তিবল, কুনাল, চারুমতার বংশধরেরা,
বর্মায় ও চালু রেখেছে ঐতিহাসিক ধ্বংসের ধারা।


হালাকু খান-চেঙ্গিসের উত্তরসূরী, এক মহান মঙ্গোলীয়
ধম্মং শরণং গচ্ছামির ঝাঁটা হাতে রক্তের হলি উৎসব করল- যতক্ষন না আইন জালুতের প্রান্তরে
মামলুকের সাইফুদ্দিনের হাতে পরাভূত হল।
বাগদাদ, দামেস্ক আর আলেপ্পোর ধ্বংসস্তুপে
'জীব হত্যা মহাপাপ' - নিরবেই কাঁদল একটি মহান বাণী।
হালাকুর হুশিয়ারি-
"আমাদের তলোয়ার থেকে মুক্তি আত্মসর্মপন
আমাদের ঘোড়াগুলি দ্রুতগামী, তীরগুলো ধারালো,
তলোয়ার বজ্রসম, হৃদয় পর্বতকঠিন, সৈন্যসংখ্যা বালুর কণার মত অগনিত; আর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা আমাদের বিরুদ্ধে কোন কাজে লাগবে না।
আমরা তোমাদের মসজিদগুলোকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলবো তখন তোমরা তোমাদের খোদার দূর্বলতা অনুভব করতে পারবে। আমরা তোমাদের শিশু ও বৃদ্ধদেরকে একত্রিত করে হত্যা করব।"


কি মহান ধর্মের বার্তাবাহক হালাকু - খোদার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করল!
ফিলিস্তিন, যুগে যুগে ইতিহাসের সাক্ষী- আইন জালুতের
প্রান্তরে নতুন ইতিহাস রচনা করল।
সামান্য দাস কুতুজ আর বাইবার্সের কৌশলী আক্রমনে
দুর্ধর্ষ তাতার বাহিনীর সমুচয় পরাজয় হল।
বালুর কনার মত অগনিত যারা ছিল
বালুর সনে তারা মিশে গেল।


আজো ধম্মং শরণং গচ্ছামির ঝাঁটাধারীরা
আরাকানের গাছ গাছালির মতই কেটে যাচ্ছে
রোহিঙ্গার আাবাল, বৃদ্ধ বনিতার ধড় আর কল্লা;
- ভদ্রে, 'জীব হত্যা মহাপাপ'।
রোহিঙ্গা তবে জীব নয়-ওরা তারো চেয়ে অধম
   ওরা মুসলমান, ওরা মোল্লা।


রাখাইনের মগ-আজো দুঃস্বপ্নের এক নাম।
হত্যা, লুটতরাজ আর দস্যুতা যাদের জন্মগত
তারা কেন নিবে শরণ 'তথাগত'!
রাষ্ট্র যখন আইন নিজের হাতে তুলে নেয়
জলপাই রঙা পোশাক যখন নিষ্পেষনের আকার
আর ভদ্রের এক খন্ড বস্ত্র, নির্বাণ লাভের অস্ত্র যখন হয় নাঙ্গা খঞ্জর - তখন মানবতা মাথা ঠুকে মরবে এতো স্বাভাবিক।


বর্মি, বৃটিশ, জাপান ঘুরে আবারো বর্মি
আরাকানের ইতিহাস ধান্যবতী হয়ে থিন কিয়াও
এক রক্তাক্ত, শোষণ, জুলুম আর নিষ্পেষনের উপ্যাখান।
অত্যাচারিতের আর্তনাদে ভারী আজ আকাশ বাতাস
মজলুমের কান্না আর শহীদের রক্তে একাকার
নাফের এপাশ ওপাশ।


আমরা বিশ্ব বিবেক, আমরা অন্ধ
আমরা মানবাধিকারের ধ্বজাতুলি;
আমরা শান্তির স্বপক্ষে পুরস্কৃত করি
আমরা সবলের সাফাই গাই-দূর্বলেরে চেপে ধরি,
আমরা ধর্মের নামে দেই মানবতার বলি
আমরা গুটিকয় মিলে মহান ধর্মকে কলুষিত করি।


রুবু মুন্নাফ
২০-১১-২০১৬
দক্ষিণ বনশ্রী, ঢাকা।