একটানা ঠাঠা করে চিৎকার করে চলেছে জলের দৈত্য
লাখ লাখ কিউসেক জল ধারন করে-
প্রকৃতির অপার বিস্ময় মেঘনা আদিগন্ত ফুঁসে উঠেছে,
সমুদ্রের উদাত্ত আহবানে নেচে উঠেছে মেঘনার ঢেউ
ওই দূরে দেখা যায় জেলেদের ছোট ছোট নৌকার পাল
নদীর ফেনিলে জলে জলে চলে মাঝিদের সংসার;
ওই পারে রাখাল বালকেরা গরু নিয়ে হেঁটে চলেছে।
এখানে জলের দৈত্যের বুকে ঘর-কন্যায় মেতেছে বধূ
ছাঁটাই বিছানায় সয়লাব ডেকের এপার ওপার ভরেছে,
ব্যাটাছেলের দল তাস পিটিয়ে সময় কাটায়
হয়তো বা কোন সুখী গৃহস্বামী আপন সংসার ভুলে
নদীর বুকে ক্ষণিকের সংসারকে আপন করে নিয়েছে।
সবার মুখে কি এক ভয়ের মূর্ত রূপ ফুটে উঠেছে
বার বার হুংকার দিচ্ছে মেঘেদের তেড়েফুঁড়ে আসার,
মেঘনার রুদ্র রোষ যেন আরো বেশি হাঁড় কাঁপানো ভয়
আপন অস্তিত্ব জানান দিয়ে যায়, এখন কাল বর্ষার।
বাতাসের একটানা শো শো শব্দে জানিয়ে যায়
কারো সাধ্য নেই প্রকৃতি নিয়ে ছিনিমিনি খেলার,
তবু ও জীবন থেমে নেই, বৈরি প্রকৃতিতে কি আসে যায়
জলে জলে জাল পড়ে, চলে নৌকায় মাঝিদের সংসার।
কাছেই মোহনপুরের ঘাট, হাত উঁচিয়ে কোন স্বজন একা
মলিন মুখ করে দাঁড়িয়ে কি যেন বিড়বিড় করে বলে,
হয়তো কোন প্রিয়জনেরে রেখে যায় মেঘনার কোলে।
হাহাকার বুকে মাটি চাপা দেয়, মুখে রাখে মেকি প্রত্যয়
তবু যেতে হয় জীবনের টানে, জীবিকার প্রয়োজনে।
কালে কালে মেঘনার জল অনেক গড়িয়েছে
কোন সুদূরে চলে গেছে জলের জীবনের ঠিকানা
তবুও তো ঘরে ফেরার কি এক আকুল তিয়াসা মনে,
যতই জলে জলে ঘুরে ফেরে গন্তব্য কি সবাই জানে?


রুবু মুন্নাফ
১৯-০৬-২০১৮
এম.ভি. দেশান্তর, মেঘনা নদী।