আজো রবিবারের সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে
কোন এক নতুন নক্ষত্র জেগে উঠে
কিংবা এক চির অপেক্ষমান তরুণী রূপা
যে বসে থাকে প্লাটোনিক ভালোবাসার প্রহেলিকায়
আসবে প্রিয় হিমু, বিনা নোটিশে তার ঝুল বারান্দায়।
শুভ্র ছেলেটা হয়তো গুহাবাসী হবার বাসনায়
সব কিছু ছেড়ে দিয়ে কোন সাধারণ তরুণীর প্রতীক্ষায়।
মোটা পাইপের চুরুটে কড়া টান মেরে মিছির আলী
এক অন্তর্ভেদি স্বপ্ন দেখে করে জিজ্ঞাসা-দেবী কই?
সেই যে আত্মভোলা যুবক আনিস-
সে আজো গুনগুন করে আলজেবরা সূত্র মুখস্থ করে
যদিও কংকা, তিতলিরা বড্ড হিসেবি হয়ে গেছে
ক্যাসেট প্লেয়ারে সূত্র আর রেকর্ড করে দেয় না।
দাদজানের পাকা পেপে চুরি করে খেতে হয় না-
তারচেয়ে বরং বার্গার আর পিৎজা চলে চেনা রাস্তায়
দাদাজানদের আশ্রয় আজ বৃদ্ধাশ্রমের ছোট কামরায়।
এক শঙ্খনীল কারাগারে বন্ধী মুখস্থ মানুষগুলো
বড় চাচারা জাদুঘরের শোভাবর্ধনের অপেক্ষায়।
মধ্যবিত্ত বড় আজব চিড়িয়া, অভিনয়টা নিঁখুত জানে
শ্রাবন মেঘের দিনেও তাদের দুচোখে কৃষ্ণপক্ষ নামে
চন্দ্রকথায় সেই যে দুই দুয়ারী ঘরে আগুনের পরশ লাগে
বিপদ সংকেত ভুলে গিয়ে চলে দারুচিনি দ্বীপের পানে।
নুহাশ আজোও হয়তো নিজেকে ভোলায় তাঁর ছায়ায়
এক নিরন্তর বয়ে চলা ছায়াছবিতে হাতড়ে বেড়ায়।
নোভা, শীলা, বিপাশা কী তাদের বাবার উষ্ণতা খোঁজে
হোটেল গোল্ডেন ইনের কোন এক সবুজের কোনায়।
এক মহিয়সী নারী-
গুলতেকিন কী নিজেকে ভেঙ্গেচুরে গড়ে নিয়েছে।
ছোট্ট দুটি শিশু নিষাদ, নিনিত বারে বারে খুঁজেফেরে
তাদের পিতার ভালোবাসা আর আদর।
শাওন কী মেঘের দিনে মন খারাপ করে তাঁর প্রতীক্ষায়।
আজো তিনি কী অনাবিল শান্তিতে ঘুমিয়ে আছেন
তার নুহাশ পল্লীর মাটির বিছানায়;
এক ময়ূরাক্ষী নদী বুকে নিয়ে তাতে সাতরায়
মর্মর পাথরে ঢেকে দেয়া টন টন মাটির কোলে ঘুমায়।


মৃতদের কোন দেশ নেই, তারা কারো পর হয় না,
মৃতরা একই দেশে ঘুরেফেরে তবু কত শান্ত নিরিবিলি
কোন মালিন্য তাদের স্পর্শ করে না।
ছয়টি বছর পেরিয়ে এসে আজো কী ভুলতে পেরেছি
কোন এক কথার যাদুকরের মায়াবী সৃষ্টির খেলনা,
মুঠোয় মুঠোয় পুরে দেয়া ভালোবাসার যে খেলা
তা কী এত সহজে হতে পারে এতোটা ফেলনা।
প্রিয় হুমায়ূন,
আপনি হয়তো ওই অনেকখানি দূরে আমাদের ছাড়িয়ে
এক অমোঘ নিয়তির কাছে হার মেনে চলে গেছেন
কিন্তু এই যে এ পারে নশ্বরতার মাঝেও
কত সহস্রগুনে আমাদের মাঝে বেঁচে আছেন।
ঘুমান আপনি আরাম করে থাকুন শান্তিতে
আপনাকে আমরা দেবো না কভু ভুলিতে।


রুবু মুন্নাফ
১৯-০৭-২০১৮
দক্ষিণ বনশ্রী, ঢাকা।