আমাদের যে যৌথ শুমারি করার কথা ছিল
-মনের গহীনের কথামালার; কে সুখী কে অসুখী
অনিবার্য কারনবশত তা স্থগিত করা হল।
প্রতিটি মনের গহীনে ঢোকা তো সহজ কর্ম নয়!
দেখেছিলাম শহরতলীর বাঁকে নতজানু অশীতিপর বৃদ্ধ
বয়সের ভারে নূব্জ্য; অসামান্য দীপ্তি চোখে তাঁর
ফোকলা দাঁতে নির্মল হাসি
- মনে তো হয় না দিলে কোন খেদ আছে তাঁর।
'এসো কল্যাণের জন্য' বলা ব্যক্তিটি শ্মশ্রুমন্ডিত
মাথায় ধবধবে সাদা টুপি;
কাঁচাপাকা চুলে পবিত্রতার হাসি ছড়ানো বিশুদ্ধতা
কে বলবে তাঁর মনে কোন অশান্তি বিরাজমান।
অথবা ঠক ঠক করে লাঠিতে ভর দেয়া বুড়ি মা
যার পিঠে পাঁজরে খুব অল্পই ব্যবধান- ক্ষুধার যাতনায়;
তাঁকে যতটা কাহিল মনে হল, ততটাই আনন্দে উদ্ভাসিত
সুখ যে কিসে বিরাজমান- আপেক্ষিকতা মনে হয়!
কেতাদুরস্ত পোশাকে ছয় সংখ্যার বেতনের ভারে কূজো
যে ভদ্রমহোদয় কিংবা ভদ্রমহিলা;
তাদের কাছে সুখ মানে কি?
উদয়াস্ত মাথার ভিতরে কিলবিল করা পোকার যাতনা
নাকি রক্তে চিনির মাত্রা একটু বাড়ানো
অথবা কোলেস্টেরল ;
সংসারহীনতার ভারে নতজানু মিয়া বিবির কৈফিয়ত
'তোমাদের সুখের জন্য খেটে মরা'।
মহাবিদ্যালয়ে পড়ুয়া কিশোর কিশোরী; প্রেমে মজে
এক নজর দেখার ব্যাকুলতায় দুনিয়া তোলপাড়
এ সুখের ভাষা বড়ই দুর্লঙ্ঘনীয়।
স্বমহীমায় ভাস্বর যে তারকারাজি, সারাক্ষণ ফোকাস
দিনশেষে তারা নাকি একা । আত্মহননে খোঁজে মুক্তি।
আর যারা গড়পড়তা মানুষ তাদের সুখ কোথায়?
'আমার চেয়ে ওমুক অনেক ভাল আছে'।
অনুযোগ শুধুই চাপানউতোরে শেষ করতে চায়।


তারচেয়ে এই ভালো শুমারি করা গোল্লায় যাক
দিনশেষে তো আমার ভেতরে যে আমি রয়েছি
তার অস্তিত্বে দুজনে বরং বিলীন হই, এসো হল্লা করি
সুখের ব্যাকুলতায় গুমরে না মরে;
অন্য আমাদের খুঁজি
যাতে দুজন অন্তত ভাগাভাগি করে থাকতে পারি।


রুবু মুন্নাফ
০৬-০৩-২০১৮
দক্ষিণ বনশ্রী, ঢাকা।