হির হির করে টানতে টানতে
একটা চাকা তুলে দিলো
চার কিংবা পাঁচ বছরের বুকে।
হাল্কা আহা উহু, এমনকি তীব্র আর্তনাদও
চাপা পড়ে গেলো উল্লাসের ভিড়ে।
টিকিধারী কেউ কেউ বলে উঠল,
“গত জন্মের পাপের ফল।”
পাপ? কি পাপ থাকতে পারে বলতো শিশুটার?
মায়ের হাত ধরে পাঁপড়ভাজা আর জিলিপি খাওয়া?
তোমাদের ধর্ম অধর্মের মারপ্যাঁচ ও বোঝেনি,
তবুও, এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে ছুটে এলো
শুধু পাপের ভার নেবে বলে?


অথচ দেখো, ঐ রথে তোমাদের ভগবান
কেমন নিস্পলক চোখে তাকিয়ে।
তিন ভাই বোন বিভোর রয়েছে
মাসির হাতের মণ্ডা মিঠাই থালায়,
অপাপবিদ্ধ এক নিমকাঠের মণ্ড হয়ে-
কেমন বসে সে, নিজের বোনকে আগলায়।
অথচ বোনেরা আজও লুণ্ঠিত হয়,
ধর্ষিত হয়, লাঞ্ছিত হয় ঘরে ঘরে।
সে ঘর তো তোমার ভগবানের নয়-
তাই দায়টাও তার নয়।


একদিন এসেছিল ছেনি-হাতুড়ি,
রক্ত-মাংসে, নখে-দাঁতের এক চরম ভগবান;
তিল তিল করে গড়েছে মানুষ মানুষের মতো করে।
জ্বালিয়েছে আগুন, পুড়িয়েছে, আবার শুদ্ধও করেছে।
অস্ত্রের আঘাতে গড়েছে চাকা।
এগিয়েছে চাকা নিজের পথে-
বর্বরতার থেকে সভ্যতায় পথ খুলেছে বারবার।
এ চাকা তো সে চাকা নয়।