তারপর সেই গল্প। সেই চেনা গল্প, চেনা কথা জীবনের-
মনে করো সেই মুখ খুঁজতে খুঁজতে আর কোথাও পাচ্ছো না,
সেই যে নদীর পাড়,দুটো লাশ পড়েছিল পাশাপাশি, পচা,
একজন তোমার গাঁয়ের ছেলে, অন্যজন সহোদর,ভাই...


অনেক খুঁজেও তুমি সেই চিহ্ন, সেই স্মৃতি কোথাও পাচ্ছো না।
সেই যে কিশোর খুব শান্ত, বোবা, নয় মাস সাথে সাথে ছিলো,
যুদ্ধে সে সমর্থ নয় তবু তাকে কোনোভাবে ফেরানো গেল না-
ভাবো, সেই ছেলে যুদ্ধে নয় মারা গেল স্বাধীন স্বদেশে তার।


সেই দুটো ঘন কৃষ্ণচূড়া,আমাদের শপথের স্মৃতিসাক্ষী,
মোড়লের লোহার কুড়োল তার কেটে নিছে জীবন-শিকড়।
মনে করো সেই মুখ, সেই প্রিয়মুখ খুঁজতে খুঁজতে আর-
আর কোথাও পাচ্ছো না খুঁজে চেনা মুখ, একটি যুদ্ধের মুখ।


উপরে তাকাও,দ্যাখো ওই মুখ চেনো তুমি,ওই যে মানুষ?
শকুনের মতো চোখ, ঠোঁটে রক্ত, কালো শুকনো জমাট রক্ত,
নোখে লেগে আছে দ্যাখো শিশুর মগজ-মাংশ,কুমারীর লজ্জা।
আর দ্যাখো একজন যুদ্ধের মানুষ কী বিমর্ষ, রুগ্ন, ম্লান---


সেই প্রিয় মুখ তুমি খুঁজতে খুঁজতে আর কোথাও পাচ্ছো না
সেই চেনা দেশ তুমি খুঁজতে খুঁজতে আর কোথাও পাচ্ছো না
সেই বাংলাদেশ তুমি খুঁজতে খুঁজতে আর কোথাও পাবে না
ত্রিশ লক্ষ লাশের উপরে ওই ছিন্নভিন্ন জাতির পতাকা॥


০৬/০৯/১৩৮৮
মিঠেখালি, মোংলা।