বুকের ভেতরে সংখ্যাহীন হাহাকার
নিয়ে বহুদিন পর বাড়িতে ফিরছি!
জীবনের ট্রেন একের পর এক স্টেশন
পেরিয়ে নিত্য ক্ষয় আর পরিবর্তন নিয়ে
ছুটে চলছে অজানা গন্তব্যের দিকে।


যতই এগিয়ে যাচ্ছি শূন্যতায় ভেঙে যাচ্ছে বুক—
এখন আর কেউ দরদী কণ্ঠে বলে না
খোকা কবে আসবি বাড়িতে?
এখন আর কেউ ফেরার পথে দাঁড়িয়ে থাকবে না
কোনো এক বইয়ে লুকিয়ে দেবে না বাড়তি কিছু টাকা
অপেক্ষা করবে না মাসের পর মাস
ফ্রিজে তুলে রাখবে না হরেক রকমের খাবার।
এখন আর কেউ ভাববে না খোকা কি করছে
দুপুরে কি দিয়ে খেয়েছে, পকেটে টাকা আছে কি
কেউ আর এমন করে দোয়া করবে না।


দূরত্ব যত কমে আসছে স্মৃতি ততই বেড়ে চলছে—
দৃশ্যগুলো যেনো সব জীবন্ত হয়ে উঠছে!
খোকা আসছে এমন খবরে জীর্ণশীর্ণ এক বটবৃক্ষের
মতো মা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতো একা একা;
গ্রীষ্মের উচ্চণ্ড দাবদাহ থেকে শীতের ঘন কুয়াশায়
এমনকি সন্ধ্যার রাস্তায় মা দাঁড়িয়ে থাকতো
কখন খোকার গায়ের ঘ্রাণ আঁচলে মাখবে!


বাড়িটি আর আগের মতো নেই
এত নীরবতা এত শূন্যতা কোথাও ছিলো না;
মায়ের অনুপস্থিতি লেগে আছে উঠোনে মেঝেতে বিছানায়
মা নেই তাই যেন আজ সবকিছু শ্রীহীন
সবকিছু বিবর্ণ সবকিছু অর্থহীন অতলান্ত হাহাকার!
আজ আর কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেনি
কেউ দৌড় দিয়েই চলে যাইনি ডাইনিং টেবিলে
কেউ ব্যাগটা কাঁধ থেকে নামিয়ে বলেনি 'আব্বু'!
ছেলে আসার খবরে যিনি সারারাত জাগতেন
ছেলের প্রিয় খাবারগুলো সারাদিন রান্না করতেন
যিনি হাপুস নয়নে নির্নিমেষ চেয়ে তাকতেন
তিনিই হলেন মা তাকেই বলে জননী।