হে স্বাধীনতা, তুমি জেগে উঠেছিলে ভৈরব নাদে
হে স্বাধীনতা, তুমি বেজে উঠেছিলে রূদ্র নিনাদে।
কুম্ভকর্ণের নিদ্রা ভেঙে তোমাকে আসতে হয়েছিলো
মাভৈঃ মাভৈঃ অভয়মন্ত্রে তুমি এসেছিলে এই বাংলায়।


স্বাধীনতা শ্যামল রূপীয়সী
তুমি ছিলে মায়ের পুষ্ট খোঁপায়।
স্বাধীনতা অবিনশ্বর পারিজাত
তুমি ছিলে স্বাপ্নিকের অগ্নিধ্যান।
স্বাধীনতা চিরউচ্চণ্ড বিদ্রোহী
তুমি ছিলে নির্বিদার সুরধ্বনি।


স্বাধীনতা আমার নিরুদ্দিষ্ট স্বাধীনতা
স্বাধীনতা আমার অমল অজর কবিতা
তুমি ছিলে চর্যাপাদের পাতায় পাতায়
তুমি ছিলে বৈষ্ণব পদাবলির বিপুলতায়
তুমি ছিলে প্রমত্ত পদ্মার ঢেউয়ে ঢেউয়ে
তুমি ছিলে কৃষক-শ্রমিকের স্বেদ-মকরন্দে।


বাঙালির বক্ষ থেকে কে তোমাকে কেড়ে নিতে পারে?
এমনকি কোনো হায়েনা আছে যে তোমাকে দাবাতে পারে?
তোমার জন্য প্রস্তুত ছিলো বাংলার অক্ষৌহিণী বর্ষা
তোমার জন্য প্রস্তুত ছিলো সংখ্যাহীন তাগড়া যুবক
তোমার জন্য প্রস্তুত ছিলো বাংলার অতিকায় নদীগুলো
তোমার জন্য প্রস্তুত ছিলো সমস্ত থমথমে জনপদ।
স্বাধীনতা আমার প্রিয় স্বাধীনতা
স্বাধীনতা আমার প্রাণের স্বাধীনতা
স্বাধীনতা আমাদের যৌথস্বপ্নের স্বাধীনতা
কী উত্তাল কী তীব্র প্রতিক্ষায়
আমরা বিনিদ্র ছিলাম বুভুক্ষু ছিলাম মাসের পর মাস!
তোমাকে পেয়ে হাসি ফুটেছিলো শোষিত কৃষকের মুখে
তোমাকে পেয়ে আনন্দে কেঁদেছিলো পিতা হারানো বোন
তোমাকে পেয়ে কী দারুণ উল্লাসে কেঁপেছিলো রাজপথ।