কখনো কখনো জীবনের রঙিন কলস—
আমৃত্যু অবহেলিত জেনেও
বৃক্ষ তুমি দীর্ঘজীবী হও ব্যথায় ব্যথায়।
যে আলো হারিয়েছে একবার তার অন্ধকার
মৃত্যুর মোড়ক উন্মোচন করেছে তার নগ্ন আকাশ,
নগণ্য ফুল জেনেও যারা দিয়েছিলো জল
তাদেরই হয়তো খুঁজবে একদিন তোমার হৃদয়।
কাকে শোনাও যাপিত নদীর কষ্ট
তাকাও, এদিকে তাকাও
সবার বুকের ভেতরে বনভূমির দাবানল—দাউদাউ।
সময়কে প্রলোভন দেখিয়ে কতদিন এসেছি শূন্য হৃদয়
সব রঙ মুছে ফেললে কীভাবে রাঙাবো এই জীবন?


জলমগ্ন রাতের শেষে সুর থেমে যায় গলায়
সাতাশ কোটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে চলে যায় হলুদ ট্রেন—
ভেঙে যাওয়া বুক তবুও পেতে চায় রুপোলি আলিঙ্গন
স্মৃতির গ্লাস ভেঙে গেলে কোথায় রাখবে জল?
কতটুকু ক্লান্ত হলে তুমি ভুলে যেতে পারো সবুজ যৌবন
জলের সাথে রুইয়ের শেষ রোদন?


ক্রমাগত অরণ্য নিয়ে করছি খেলা
বৈকালিক ঢেউয়ে ঢেউয়ে কেটে যাচ্ছে তবুও জীবন
মানুষের হাড় থেকে এক ঝাঁক পাখি
ছুটে যাচ্ছে সমুদ্রের দিকে; অনেক মেঘদল
কফিনের ভেতর থেকে চিৎকার নিয়ে চলে এসেছে
আমাদের গলির কাছে।
পরিত্যক্ত গাড়ির পেট থেকে মশাদের লাবণ্য শেষে
ফিরে আসতে হয় বিষাধবিধৌত সূর্যাস্তের আশায়
জেনেও করুণ সত্য জীবনের এই অমাবস্যায়।
বুকের ভেতরে নেই সেই ফুলের ঘ্রাণ
আমাদের আদিম ক্লান্তির বুকে শুয়ে আছে স্নিগ্ধতা
বিছিন্ন দ্বীপ তবুও ফেপে ওঠে রক্তস্রোতের নেশায়।


আলোর ভিড় ঠেলে যারা নিয়েছিলো রাতের সঙ্গম
যারা জীবনের রৌদ্র হতে চলে গিয়েছিলো ছায়ায়
তাদেরও তুমি চেয়েছিলে—
চিবুকের নিচে আজও উড়ে পরিচিত মৌমাছি
খবর রটে যায় তরুণদের হল্লায়।
মানবী ওষ্ঠ তুমি আজ কেমন আছো এইসব পথে
অনেক গল্পের গহীনে সাঁতার কাটা আমাদের হাঁসগুলো
দেখো কী ভীষণ অবহেলায় গিয়েছে মরে?
শীতের শূন্যতায় যেসব পতঙ্গ রোজ মরে যায়
মানুষের জীবন ঢেকে যায় তাদের চঞ্চল সেন্টিমিটারে
কাকে তুমি দোষ দেবে এই করুণ কারাগারে?