কতদিন ডেকেছো তুমি
কতদিন বাড়িয়ে দিয়েছো অমল হাত
বাতাসে বাতাসে শব্দের কারুকাজ
নৈঃশব্দ্যের ভেতরে তুমুল অনুরাগ।
এই জীবনের অলক্ষ্যে তখন গল্প ছিলো
প্রাচুর্য ছিলো রঙিন মাছের
ছিলো পাখি দেখার অবাধ জীবন, সুচারু স্পন্দন।
তুমি ডেকেছিলে বারবার সুখদ সংকেতে
ফিরে গেছে বেদনায় জলপাই পাতার রাত
ঝরা পাতার সাথে ঝরেছে সময়ের শিশির
ডিমের হলুদে কেটেছে সংখ্যাহীন সংঘাত
জীবনের গলিতে যখন ছিলো প্রেম
সুখ ছিলো রাতের ঘুমে
স্বস্তি ছিলো স্নায়ুর গভীরে
যে মৃত্তিকার জরায়ুতে যন্ত্রণা ছিলো
বীজের ভেতরে ছিলো দীর্ঘ হাহাকার
সে জীবন ছিলো না তখন এই ভূগোলে, এই জনপদে
তখন ছড়ায়নি কষ্টের মহামারি,
তৃষ্ণা ছিলো না পৃথিবীর কার্মাত বৃষ্টিতে
ফুলের কবরে ছিলো উৎসবের ক্লান্তি।
কেনো ডেকেছিলে
কেনো মেদুর শব্দে ভেঙেছিলে হৃৎপিণ্ডের আকাশ
সোনালি বালুর ওপরে মৃত সিংহের শরীরে
খেলা করে আলোর আস্বাদ।
রাতের ক্ষত নিয়ে হেঁটে চলি
বিবিধ দূষণে নেই সেই শান্তি
মেহগনির পাতার ভেতরে নেই আজ আশ্রয়
পরিচিত ঘ্রাণ তার ব্যাপন শেষে
পরিচিত ভীড় তার চিহ্ন ভুলে
এঁকে চলে হালিক কর্মযজ্ঞ।
আজ অনেক মাংসের ভীড়ে
জীবন দ্বন্দ্বের শীর্ষ থেকে গড়াতে গড়াতে
যে আমি ছুটে চলি মধুসন্ধানী
অলত আবেগে জলের খুব কাছাকাছি
যদি পেয়ে যাই অনেক খননের পরে
স্মৃতির অমূল্য প্রত্ন
বাঘের আহারের পরে মৃত হরিণের দেহের মতো
তবুও পাই যদি সেই জীবন।
এই সন্ধ্যার শেষে
তোমার দিকে তাকিয়ে আছি ঝরে যাব বলে
চলে যাব বলে দূষিত জলের ব্যাসার্ধ হতে দূরে
যতদিন চেয়েছি আমের স্বাদ
ক্লেদজ কুসুমিত স্পর্শের রাত
চারপাশে মশা আর মশারির মাঝে
বাসনার ছাড়পত্র ছুড়ে ফেলার পর
বুঝেছি এই পরিচিত ভূমি
দৃশ্য বদলে বদলে চলে গিয়েছে দৃশ্যের অগোচরে
সুদূরের ভূমি তাই
দূরে যেতে যেতে দূরত্ব বাড়াই।