চারিদিকে সুনশান নীরবতা
একা একা বসে ভাবছি তার কথা
কতদিন হলো তাকে দেখি না
সে কেমন আছে তাও জানি না!
ইদানীং মাটির দিকে চেয়ে করি শোক
আঙুলের ঘ্রাণে ফিরে আসে বিকলাঙ্গ স্মৃতিরা
বুকের ভেতর যন্ত্রণা নিয়ে তাকিয়ে থাকি নির্নিমেষ।
কিছুদিন পূর্বে এখানে তাকে দেখেছিলো কয়েকজন-
তাই সর্তক দৃষ্টিতে তাকাই এদিক-ওদিক
যদি হঠাৎ পেয়ে যাই তাকে দেখার অপূর্ব সুযোগ!
স্কুলপড়ুয়া এক কিশোর প্রেমিক হল্লা করছে খুব
একটি লাল গোলাপ গুঁজে দিচ্ছে তার প্রেমিকার চুলে,
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণ সানগ্লাস পরে হাঁটছে
আর ফোনে বলছে তুমি কোথায়?
এ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের অনেক গল্প আছে
স্নায়ুতে আছে অনেক অনেক আশা, প্রেম, স্বপ্ন।
তেমন কোনো কাজ ছিলো না
তেমন কোনো তাড়াও ছিলো না
তেমন কোনো পরিচিত মুখের দেখা পাওয়াও কঠিন।
সময়ের সাথে সাথে জটিল হতে থাকে মানবজীবন-
কয়েক বছর আগে হল্লা করা আমিও
বদলে গিয়েছি কোনো এক গ্রামের মতো।
লাল স্বপ্ন নিয়ে প্রতীক্ষা করা সেই বুক আঙুল
ঘুমোনোর পূর্বে তাকে ভাবা সেই স্নায়ু
সেই হৃদয় যেখানে প্রেম ছিলো রুশ বিপ্লবের মতো
বদলে গিয়েছি ধীরে ধীরে দীর্ঘ নীরব শোকে।
মাঝে মাঝে মানুষ নিজেই তার ভবিষ্যৎ টের পায়-
মনে হলো তাকে আজ আবার দেখতে পাবো
মনে হলো সে আজ আসবেই
এপথে যেখানে বসে আছি খুব একা
সে আজ আসবেই।
মিনিট দশেক পরে হঠাৎ দেখি জিন্স পরা এক নারী
মুখে মাস্ক পরা তার
আলুলায়িত চুল বাতসে ওড়ছে দারুণ
কুমড়ো ডাটার মতো যার দুহাত-
সে আমারই জন্ম জন্মান্তরের পরিচিতা।
অনেক অনেক বদলে গিয়েছে সে-
সে চলে যাচ্ছে হেঁটে হেঁটে ধীরে ধীরে
দুচোখের সামনে দিয়ে-
বিশ্বাস হচ্ছে না সে চলে যাচ্ছে ধীরে ধীরে
ক্রমেই চলে যাচ্ছে ধীরে ধীরে দূর হতে দূরে!
বৃক্ষের মতো চেয়েছিলাম তার দিকে
নদীর মতো জল ছিলো দুচোখে
সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো দুরুদুরু ছিলো বুকে।
মনে হয়েছিলো তার পথ আগলে দাঁড়াই
বলি তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো
তোমাকে কিছু বলার ছিলো
না-বলাগুলো নিয়ে ভীষণ যন্ত্রণায় বেঁচে আছি
আমি খুব কষ্টে আছি তোমাকে ছাড়া।
ভাবলেম এসব সস্তা কাকুতিমিনতিতে কাজ হবে না
কৈশৌরিক আচরণে জাগবে না মায়া তার হৃদয়ে
সে এখন কিশোরী নয় যুবতী, নারী-
অথচ আমি আজও পুরুষ হতে পারিনি!
প্রেম কোনো কোনো তরুণকে পুরুষ বানায়
আর কিছু কিছু পুরুষকে তরুণ বানায়।
সে চলে গেলো হেঁটে হেঁটে ধীরে ধীরে
আমার দৃষ্টিতে নীল ব্যাসার্ধ হতে অনেক, অনেক দূরে।