কেমন হতো যদি তোমার হাতে হাত রেখে চেয়ে চেয়ে
চলে যেতাম দূরের দিগন্ত-ছোঁয়া এক নদীর তীরে
তোমার চুল থেকে চুয়ে চুয়ে পড়তো নীল অন্ধকার
শহরের এক মাতাল ট্রেন ছুটে আসতো তোমার খোঁজে
বিগত পদচিহ্নের স্মৃতি মেখে ওড়ে আসতো শ্রাবণ
অলৌকিক রিকশায় চড়ে চলে যেতাম কৃষ্ণগহ্বরে
চলে যেতাম নগরের হর্ন হতে তাল পাতায় হৃদয়ে
বাঘের হুংকারে পালিয়ে যেতাম আমরা যমজ হরিণ...
কেমন হতো যদি বাদুড়ের মতো ওড়ে ওড়ে চলে যেতাম
মিশে যেতাম ধানের পাতা থেকে ঝরা শিশিরের মতোন
তোমার হাসির অনন্ত আলোর নিচে হেঁটে হেঁটে বহুদিন
নগরের মতো শরীর দেখে হয়ে যেতাম নিওনের সন্ধ্যা...
কেমন হতো যদি তুমি হাঁটতে হাঁটতে পেরোতে নক্ষত্র
অথবা নদীর জলের ওপর শুয়ে শুয়ে দেখতে আমায়
শাদা-কালো দ্বীপের মাঝে নারকেল গাছের সবুজ পাতা
বুকে নিয়ে আমি তেড়ে যেতাম যেন একটি উন্মাদ বাস
তুমি শব্দ উচ্চারণ করতেই শুকিয়ে যেতো সমস্ত জল
পৃথিবীর সব বৃক্ষ যুবতীর পায়ের মতো ডাকতো আমায়
সংযমের ব্যাকরণ ভুলে আমি হতাম মৌলিক পুরুষ...
কেমন হতো যদি তোমার তিলগুলো হতো থালার মতো
আমি নিয়মিত কবিতা পান করে হতাম সুঠাম যুবক
কেমন হতো যদি তোমার ওষ্ঠের খালে জাহাজ চলতো
আমি নিয়মিত সুন্দর দেখে দেখে হতাম এক সন্ত
কেমন হতো যদি তোমার চোখে প্রবাহিত হতো ঝরনা
আমি ভেসে ভেসে চলে যেতাম চিন্তার নীল স্তনে
কেমন হতো যদি তোমার চুম্বনগুলো হতো প্রজাপতি
সবুজ বন পেরিয়ে আমি তাদের খুঁজে বেড়াতাম...
হয়তো ভালোবাসা এক নীল সেতু, হয়তো চিলের ডানা
লাল জানালা ধূসর হাতছানি অদ্ভুত শ্রাবণ দূরের শহর
হয়তো প্রেম মানে খসে পড়া দেয়ালের সংখ্যাহীন চুন
কেমন হতো যদি তুমি-আমি হতাম অখণ্ড দেয়াল...