ইচ্ছা আছিলো এক বড়লোকের বেটির সাথে চুটাইয়া প্রেম করবো
তার বাপের গাড়িতে চইড়া একদিন লং ড্রাইভে যাবো
তার পাশে বইসা প্রতি মাসে কক্সবাজার যাবো, সিলেট যাবো
কোনো এক পশ হোটেলে সারারাত বিয়ার খাবো, বদকা খাবো।
আশা ছিলো এ শহরের কোনো এক বড়লোকের মাইয়া
আমার মিষ্টি কথায় পইটা গিয়া বলবে, 'বেইব, লাভ ইউ'
তারপর তার টাকায় কোনো এক ভিআইপি কফিশপে কফি খাবো
কোনো এক এপ্রিলে তার টাকায় নেপালে ঘুরতে যাবো।
দামি পোশাক পইরা আমার বন্ধুদের তাক লাগায় দিমু
তাদের সাথে সারারাত বাড়ি গাড়ি বিলাসের আলাপ করমু
বলমু যে জীবন আমরা যাপন করি তা হলো পশুর জীবন
তিনবেলা ভাত খাইবার লাইগ্যা আমাদের টেনশন করতে হয়
একটা চাকরির লাইগ্যা সবকিছু বিসর্জন দিতে হয়
একটা ট্যুরের আশায় বছরের পর বছর কাটাতে হয়।
অনেক সাধ ছিলো বড়লোক প্রেমিকার ওষ্ঠে চুমো খাবো
সে বইমেলা থেকে আমাকে অনেক টাকার বই কিনে দিবে
লিট ফেস্টে তার কাঁধে হাত রেখে, সিনেপ্লেক্সে তার কাঁধে মাথা রেখে
বাতিঘরে গিয়ে তার সাথে বইয়ের ঘ্রাণ নিবো, জন্মদিনে একটা শিক মোটরসাইকেল গিফট করবে।
তার শরীরের মাংসের সাথে আমার মাংসের তুলনা করমু
তার দামি পারফিউমের ঘ্রাণে আমি হারিয়ে যাব কোথাও
তার লিপ গ্লস, প্রাইমার, কনসিলার, সেটিং স্প্রে
এসব নাম না-জানা মাখানো মুখের রূপে কবিতা লিখবো
সারারাত বায়োলিনের শব্দে তার সৌন্দর্য পাঠ করবো
মাঝরাতে দেখা করার মন চাইলে ড্রাইভারকে দিয়ে
পাঠিয়ে দিবে কালো রঙের বিলাসবহুল পাজেরো।
প্রত্যাশা ছিলো একদিন তার সাথে ইউরোপে যামু
আইফেল টাওয়ারের নিচে তার সাথে সেলফি তুলুম।
অথচ আমার সাদা-কালো জীবন ধূসর থেকে ধূসরতর হয়
সামনের মাসে কেমনে চলমু এই টেনশনে ঘুম আসে না।
কতদিন বড়লোকদের মাইয়াদের ওপর ক্রাশ খাইছি
তাদের দামি গাড়িতে বসে একটু গপ্প করতে চাইছি
কোনো একজনকে বিয়ে কইরা অভাবের কষাঘাত ভুলতে চাইছি
কোনো একজনকে পঠাতে মাসের পর মাস চেষ্টা করছি।
আমার কী গাড়ি আছে যে তারা আমার কথায় পটবে?
আমার কী আর পশ বাড়ি আছে যে তারা আমায় ভালোবাসবে?
আমার কী আর বাবার বিত্ত-ভৈবব আছে তারা বিয়ে করবে?
এই ভোগবাদী সমাজে মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক হয় না
এখানে সম্পর্ক হয় প্রেম হয় ভালোবাসা হয় টাকার সাথে টাকার।