তোমার আকাশে চাঁদ মানায় না; মানায় সরিষা ক্ষেতে
যেথা শেয়াল হাঁকে, পাখি ডাকে, মধুকর ওঠে মেতে।
তোমার আকাশে সূর্য মানায় না; মানায় নদীর বাঁকে
তোমাতে মানায় নোংরা পায়ে উড়ন্ত কালো কাকে।


আউশ ক্ষেতে বাতাস মানায়
তোমাতে গাড়ীর কালো ধোয়ায়।
তোমাতে শুধু মানুষ আর মাুনষ, নেই দয়া-মায়া
মানুষগুলো যন্ত্র যেন, নিত্য একই বৃক্ষের ছায়া।


যতই সুন্দর হোক বাহির অবয়ব, ঘর-বাড়ি রাস্তা
তোমার সব পাথরের মানুষ, কারো মনে নেই আস্থা।
তোমার আকাশে উড়োজাহাজ, আমার আকাশে মেঘ
আমার অজুদে আছে ফুল-ফল আর নদীর বেগ।


তোমাতে মানায় যানজট আর দুর্গন্ধ ময়লার স্তুপ
নিরালায় কত শোভা আমাতে হয়ে আছে নিশ্চুপ।
তোমাতে মানায় চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানী
যতই থাকুক বিভাবরী নানা রকম আলোর ঝলকানী।


আমার আছে ক্ষেতভরা গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা
শিশির ধোয়া মেঠোপথ আর জোনাক ওড়া সন্ধ্যা।
তোমাতে মানায় না উন্মুক্ত আকাশ, নীলের ছড়াছড়ি
ফলের রসে ভেজা মাটিতে আম-জামের গড়াগড়ি।


তোমাতে মানায় না বেণুবন, পেঁচার আনাগোনা
তাইতো এদের গান তোমার কভু হয় না শোনা।
কলমি লতা, শাপলা-পদ্ম আমাতে পায় শোভা
রঙিন ঝাড়বাড়ির চেয়ে মোর পদ্মের অনেক প্রভা।


শ্বেত পাথরের ঘরের চেয়ে মোর মাটির ঘর দামী
হেথা প্রশান্তির শীতল বাতাস বুক জুড়ায় দিবাযামী।
আমার আছে শিশির ধোয়া, শুকনো পাতায় ঢাকা পথ
তোমাতে আছে কঙ্কালসার, ভেজাল মানুষের রথ।


রচনা : ১৪.১১.২০০৬ খ্রিঃ