ধূলো উড়িয়ে গরুর পাল ঘরে ফেরে গোধূলী বেলায়
সন্ধ্যা নীড়গামী পাখিরাও ঝাঁকে ঝাঁকে ফেরে কূলায়।
সন্ধ্যা ও ভোরে শালিকের অর্থহীন অবিরাম জটলা চলে
হৃদয় একাত্ম বাঁশপাতার ঝিরি ঝিরি ছন্দের তালে।


তারা কি কষ্ট পায়? ভক্ত হারানোর শূন্যতায়?
কতদিন হল ওই নৈসর্গিকতা থেকে বিছিন্ন হৃদয়!
মাটির মানুষের চিরচেনা অতি আপন মুখ আর
আজানু ধূলো-কাদা স্মৃতির সরণিতে ভাসে বারবার!


ধূলো-কাদায় যাদের সাথে খেলতাম দিবানিশি
তাদের সন্তানরাও আজ হয়েছে তাদের বয়সী।
আজ ধূলো কাদা নেই বদলে গেছে একটু বেশি
আমি তাদের সামনে গেলে ভাবে পরদেশী!


এমন তো ভাবিনি কল্পনায়ও কখ্খনও কোনোদিন
আমি স্বাধীন তবুও কেন হৃদয়ে বাজে ব্যথার বীণ?
আজ পিচঢালা পথ, ঘরে ফিরতে ইচ্ছে করে!
কেনো পারি না?  ভেতরটা কেমন গুমরে মরে!


মায়ের মনে কী আছে সেই সুতীব্র প্রতিক্ষা!
ভাইবোনদের আমায় পাওয়ার আকাঙ্খা!
বাবার উৎকন্ঠা! দাদীর মৌনতা আমায় ঘিরে!
কেউ কি চায় আমি আবার ঘরে আসি ফিরে?


প্রতিবেশী কেউ আমায় নিয়ে ভাবে এক প্রহর?
হয়তো ভুলে গেছে, কারো মনে কী দেয় মোচড়?
সেদিন গিয়েছিলাম ছদ্মবেশে তিমির রাতে
আমার পায়ের ছাঁপ পড়েনি পিচঢালা রাস্তাতে!


মাটির বুক থেকেও হয়ত মুছে গেছে মোর ছায়া!
ফিরে এলাম! মাটিও আজ শক্ত পাথরের কায়া।
কত মৌসূম বৃষ্টি হল, কতবার মাটির রেখা বদলালো!
কত শীতের কুয়াশার ভোর, কত খরায় মাটি ফাটল!


বদলে যায় আমারই অজান্তে, সবই বয়ে যায়।
নিজকে লাগে শিকড় কাটা কূলহারা বৃক্ষ হায়!
কিসের বাঁধনে আমি আটকে আছি এই দূরে
আজ শিকড়ের টান, মনটা শুধু ফিরতে চায় ঘরে!


রচনা : ০২.০৩.২০১৫ খ্রিঃ