চাঁদকে দেখে করতাম রাতের পরিমাপ,
যেতাম যুদ্ধে, খুলতাম তরবারির খাপ।
চাঁদ ঘুমালে তারাদের করতাম সাথী,
প্রাণকাঁপা! ভয়াল নিকষ কালো রাতি।
কতদিন আর তাদের সাথে নেই দেখা,
অগোচরে পাড়ি দেয় দিগন্তরেখা।
হিমেল শিশির পায়ে ফোটাতো কাটা,
ষড়ঋতুকে সপেছিলাম এই গাটা।


পদধ্বনীতে থেমে যেতো ঝিঁ ঝিঁ,
পবনে দুলতো কাটায় সজ্জিত সিজি।
রাতের কোলে নিঃশব্দে মলয় হু হু,
তোদেরই জন্য প্রাণ করে আজ উহু!
দূর্বাঘাসের উপর নাঙা পায়ের ছাঁপ,
শব্দে খোঁড়া ঠেঙে ফড়িং দিতো ঝাঁপ।
ভোরের শীতল মাটি কেমন আছিস তুই?
সময়ে দেখিস, বুকে তোকে কীভাবে ছুঁই!


ভয়কে উপেক্ষা করে চলেছি লক্ষ স্থির,
সুনসান রাত অভ্রতলে যাত্রা একাকীর।
সময়ের হাতে সর্বস্ব করেছি সমর্পণ,
জয় করেছি আহত-ঘৃণিত এক জীবন!
এটা যোদ্ধার প্রাপ্য, সন্ধিতে কাপুরুষ,
সংঘর্ষে উপাধি তার কুপুরুষ!
তবুও আমি ধরেছি হাল, করেছি মাথানত
নিজকে বিলিয়ে ধরেছি ঢাল হইনি উদ্ধ্যত!


ভয়েরা তোরাও তো ছিলি তখন হতবাক!
দেখ শুনলে অপভাষ! হয়ে যাবি নির্বাক!
মাঁচার নিচে দোয়েল, তুইও জানতিস সে খবর,
কত ঝড় মেঘ বুকের তলে দেওয়া আছে কবর।
শঙ্কিত পায়ের ছাঁপ পড়ে সাপ ও ব্যাঙের ভালে,
পালাতো, জানত না, আমিও ত্রস্ত নির্জনকালে।
কোলাহলহীন সমগ্র পৃথিবীটাই এক সত্বা,
কাদের জন্য নিদ্রাবর্জন নিতান্ত অগত্যা?


তমসাছন্ন পৃথিবীটাই সেদিন ছিল সহচর
সে আর আমি মিলে মিশে একাকার।
আজ আমি কনক্রিটে পড়ে গেছি বাঁধা,
তোদের জন্য ভেতরে গুমরে কাঁদা।
তোদের ভুলিনি যতই থাকি ভিনগ্রহে
অন্তরটা পুড়ে বিরহের দারুন দ্রোহে।
তোদের জন্য মনটা শূন্যতায় ভরা,
জানতে বড় ইচ্ছে, কেমন আছিস তোরা?


রচনা : ০৩.০১.২০১৫ খ্রিঃ