বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ, তাঁর রচিত অনবদ্য কাব্যগ্রন্থ সোনালি কাবিন প্রকাশের ৪০ বছর পুর্তি হয়েছে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে।গত ২৯ জানুয়ারি ২০১৪ইং কবির বাসভবনে যাই অসুস্থ কবিকে দেখতে। অতঃপর কবিকে নিবেদিত আমার নিম্ন লিখিতঃ কবিতাটি আমি কবিকে পাঠ করে শুনালে, কবি আমাকে পরম আদরে কাছে বসিয়ে পিঠে মাথায় হাত বুলিয়ে উষ্ণ আশিষ করেন।দীর্ঘমেয়াদী চোখের অসুখে কবি এখন প্রায়ান্ধ, তবু ও অনুমান ভর করে এক কপি সোনালী কাবিন কাব্য গ্রন্থে নিজ হাতে অটোগ্রাফ দিয়ে আমার হাতে তুলেদেন।
এবং বলেন বাবা এই প্রশংসাহীন সমাজে তোমাকে কেউ কবি বলবেনা, তুমি লিখতে থাকো এবং পড়তে থাকো একদিন নিজেই তুমি আবিষ্কার করবে তুমি একজন কবি।


১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ খ্রীঃ বাঙলা ভাষার এই অন্যতম প্রধান কবি লোকান্তরিত হন।
ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না.....রাজেউন।
কবির আত্মার মাগফেরাত কামনা করি মহান আল্লাহপাক তার  বান্দাকে যেন তার দীদার নসীব করে ধন্য করেন...আ'মীন।
কবি বলেছিলেন..সোনার মোহর নেই দেনমোহর চেয়োনা হরিণী/
ইহজগতে যে স্বর্ণমুদ্রার অভাবে কবির দয়িতার দেনমোহর পরিশোধে অপারগতা ছিল সে অভাব নিশ্চয়ই জান্নাতি সূবর্ণমুদ্রায় মোচন হবে।


কালের কলস
মোঃ সাদিকুর রহমান রুমেন।


(কবি আল মাহমুদ কে নিবেদিত কবিতা)


আমরা জানিনা তোমার মায়ের
নাকের নোলক কবে হারিয়েছে,
হয়তো তোমার কিশোর বয়সে?
কিন্তু আমরা তোমার কাছ থেকে এটুকু সংবাদ জেনেছি মায়ের হারিয়ে যাওয়া
নাকের নোলকের সন্ধান করেছো তুমি সারা বাংলাদেশে।
তাই বাংলার পথঘাট মাঠ ধুধূপ্রান্তর সমতল,পাহাড়,সবুজ বনানী,হাওর, বাওর,নদী নালা,সমুদ্র সরোবর,বিলঝিল,শালিক শঙ্খচিল।
ধানের জমি,গোয়ালের গরু,
তাঁলপাতার পাখা, বটের তরু,
আমের মুকুল,শাপলা শালুক ফুল।
নিবিড় নিসর্গ,তুমি চাক্ষুষ করেছো কবির অন্তঃর্দৃষ্টিতে।
তোমার মনে ছিল কবি হওয়ার স্বপ্ন,
কবি হবার জন্য তোমার গন্তব্যস্থান তুমি ঠিক করেছিলে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর,অতঃপর তোমার যৌবনের প্রারম্ভে তুমি একদিন একটি টিনের স্যুটকেশ বগলদাবা করে যাত্রা করলে তোমার কবি হবার গন্তব্যে।
এরপর আর প্রত্যাবর্তন করতে হয়নি তোমাকে,কারন তোমার ঐ টিনের স্যুটকেশ যার উপরে ছিল গোলাপ ফুল আঁকা,তার ভেতর তুমি ভরে নিয়েছিলে তোমার চাক্ষুষ করা আস্ত একটি বহমান বাংলাদেশের চিত্র।
তারপর তুমি তোমার সতীর্থও স্বজাতিকে একটি একটি করে খুলে
দেখাতে থাকলে তোমার বাক্সের মুল্যবান সামগ্রি।
কালের কলসে ভরে রাখলে কবিতার রোদ,
জীবনে করোনি কাউকে তোষামোদ।
কবিতাই লিখেছো জীবনভর
সোনালী কাবিনে আছে তার অমুল্য সাক্ষর,
প্রেমিক,ধার্মিক তুমি কবি ও বিপ্লবী,অন্তরে জাগ্রত দেশপ্রেমবোধ
বাংলা ভাষার শ্রেষ্টকবি আল মাহমুদ।
২৯।০১।২০১৪ খ্রীষ্টাব্দ।


আলোচকঃ
মোঃ সাদিকুর রহমান রুমেন।
কবিও সমালোচক।
গ্রামঃ জামালপুর থানাঃ জগন্নাথপুর জেলাঃ সুনামগঞ্জ,
বাংলাদেশ।