গ্রহণ লেগেছে বুকের ওপর –অজান্তেই। অবচেতন তো জানান দিতে অক্ষম, আফসোসের সীমা তাই অতিক্রম করে দিগন্তবলয় –নাহলে তীব্র রোদে মরুপ্রান্তর ছুটে ফেরা বিভ্রান্ত ঘোড়াও খুঁজে পেতো দিক, কত ভুল সহজেই হত নির্মূল।
এ গ্রহণের ভালো নাম প্রেম। নক্ষত্র যেমন আলোকবর্ষ পেরোয় অনায়াস, ঝর্না মিলিয়ে যায় খড়ার গভীরে, একইভাবে প্রেম সঞ্চারিত হয় আমার শিরায়-ধমনীতে। নিঃসাড় আঙুলগুলো কেঁপে ওঠে হৃদস্পন্দনের কম্পাঙ্কে।
গ্রহণ? নাকি পূর্ণিমার আকাশ? অরণ্যের হীনতম গহীন কোণে জ্বলে ওঠে দ্বীপের আলো। কর্কটক্রান্তির উত্তরের সাদা কালো ক্যানভাসে দেখা যায় অরোরা বোরিয়ালিসের ব্রাউনিয়ান মোশান। বহুকালের না-পাওয়া স্বপ্নরাশি খুঁজে নিতে চায় নিশ্চিন্ততার আশ্রয় – শরীর জুড়ে স্পর্শের উষ্ণতায়।
অমাবস্যার কালোয় ছেয়ে গেছে চারিদিক। দিবাকর যত দূরে সরে যায়, ছায়া হয়ে ওঠে দীর্ঘ, চিরস্থায়ী। আর প্রেম?
সে বুঝে নেয় ব্রহ্মান্ডে অবিনশ্বর গাঢ় স্থান। আর ঠিক তখনই বাস্তব কষে দেয় আলোকবর্ষের পরিমাপ- সাত দুগুনে চোদ্দ, গুণিতক তিন, পরে রইলো দুয়ে–দুয়ে নয়। হিসেবে প্রশ্ন থাকলে দেখতে পারো উদরের মধ্যভাগ চিরে - রক্তের স্রোত সোঁতা হয়ে নেমে আসছে অলিন্দের পাশ ঘেঁষে, সিক্ত কপোল- অসহনীয় না–পাওয়ার অবসাদে। ছুঁতে চায় আঙুল তোমায় একটিবার, মুহূর্ত কে জাগিয়ে তুলতে দাও। বাঙ্ময় হোক হাতের আঙ্গুলগুলো, এ আবেগ স্বীকৃতির অপেক্ষা রাখেনা তো আর! যন্ত্রণা ঘিরে ফেলেছে বল্লরীজালিকায়, চিরভাস্বর পূর্ণতায় ভরিয়ে দিয়েছে কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ – নিদারুন, পরাবাস্তব সম্মোহনে।
এই অ-মিলন সত্যি, এই লোহিত কণিকার স্রোত সত্যি, এই মরীচিকা সত্যি….তবু সবকিছুর ওপরে গিয়ে সত্যি হল এই পরিচয়হীন প্রেম! অবচেতন, তুমি চিরকাল অজানাই থেকো, ভুলগুলো হওয়া খুব প্রয়োজন ছিল। হিসেব কষে বলো, বুকের ওপর আজ ছেয়ে গেছে গ্রহণ? নাকি শুক্লপক্ষের চাঁদ?