কতোই বা বয়স তখন তার সাত কিংবা আট
বাবা মা আদর করে নাম রেখেছিল বুলবুল
পড়াশুনা বলতে স্কুলের বারান্দা অবধি পৌঁছে ছিল;
হঠাৎ এক ঝড় এসে যেন হাতের বই গুলোকে
ছোঁ মেরে নিয়ে গেছে স্বপ্ন ভাঙার দেশে।


সেই বেদনায় রঙিন বইয়ের বাহারি বর্ণ গুলো
হুঁ হুঁ কেরে কেঁদে উঠেছিল।
আর ওকে দুহাত নেড়ে করুণ সুরে ডেকেছিল,
বলে ছিল-আমাদের সঙ্গে নাও।


কিন্তু ভাগ্যের র্নিমম পরিহাস খন্ডানো যায় কি?
আজও চারদিক আঁধার হয়ে আসে ,কালবৈশাখী ঝড়
পিছু ছাড়ছে না কিছুতেই।
জীবনে দুখের কী ভয়ংকর চিত্র!


দুখের সাগরে ব্যথার নীল ঢেউয়ে ঢেউয়ে
ফেনার মত ভেসে চলেছি।ভাসছি অবিরত।
কেনই বা বারেবার ঐ পাষাণ বাস্তবাতা
ওকেই ল্যাং মেরে ফেলে দেয়।


তখন থেকেই ছুটছে তো ছুটছেই ,
নিজের গন্ডি ছেড়ে ছেলেবেলার মায়ের সেই আদর,
বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় পরিজনসবই পর করেছে তখনই।
কখনও দুধের বালতি নিয়ে চার/পাঁচ
তলায় দুধ দেয়া ,কখনও বা ঘরের কাজ ।


সবশেষে গভীর রাতে মেঝেতেই ঘুমের রাজ্যে
কত মশা মাছি তাকে ছুঁয়েছে নিজেও বলতে পারবে না।
অথচ কত সাধনার পর সে মায়ের কোল আলোকময় করেছিল
সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মেছিল।আজ সবই অতীত।


সারাটি জীবন সংসারের ঘানি টেনে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে
সোনালী স্বপ্ন আজও ধরা দেয়নি; সুখের সাথে তার যেন
আজন্মের আড়ি।দুঃখ কেনার মত কেউ নেই বুঝি পৃথিবীতে।


মাঝে মাঝেই আকাশপানে চেয়ে আত্মচিৎকারে
বলে -“হে বিধাতা কী আমার অপরাধ?
সুখ নামক সোনার হরিণের দেখা কভু মিলবে না”?
এই ভাবতে ভাবতে সে আবার উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে।


অশ্রুজল মুছে কাজে লেগে যায় ,দিন শেষে রাত আসে ;
তবে কি আশ্চর্য লাগে যে তার দিনের আলো যেন আসে না।
কিছু মানুষ যেন পৃথিবীতে দিতেই এসেছে
বিনিময়ে সে একমুঠো নিটোল ভালোবাসা চায় ।


তার এই চাওয়াটুকু কী পূরণ হবে?
সেই প্রত্যাশায় প্রহরগুনে,দুখীদের দুঃখ যেন চিরসাথী ...