প্রান্তঃ  একদিন গ্রীবা হতে ঘাড় পর্যন্ত তোর চুলের মুঠি ধরে ঐ আফিমের নেশা ভরা দুটো চোখে, আমি এঁকে যাব লতা, পাতা,গুল্ম  আর  প্রসূত হবে সহস্র ফুল।


পূরবীঃ   হা হা হা, হা হা হা, তোমার ঐ শূন্য সফেদ ক্যানভাসে স্পষ্ট ধরা পড়বে  এক গোছা চুলের দাগ, যেখানে চোখ রেখে দেখবে  কি অদ্ভুদ বেদনার রঙ, স্পষ্ট আবেদন মাখা নিরেট এক জোড়া চোখ। কোন দাবী নেই তার নেই অভিযোগ।


প্রান্তঃ  একদিন তোর সিঁথিতে এঁকে দেব লাল পালকের সিঁদুর , কপালে লাল টিপ সেদিন লাল পেড়ে শাড়ি তে তুই খুব মানাবি। তোর পুরোটা শরীর হবে দীঘল কবিতা। যেন উপমা অনুপ্রাসে ভরপুর চিত্রকল্প।


পূরবীঃ   হা হা হা , হা হা হা, আমার সিঁথিতে আলপনা এঁকে তুমি হবে নিস্ফল। চারদিকে ঘন অমানিশায় ঐ লাল রঙ ঢাকা  পরবে অন্ধকার সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে। শুধু থেঁতলে যাওয়া কিছু আশংকার মেঘ ভেসে থাকবে আমার চোখে। যতই তুমি লালীমা আঁকবে ঐ চোখে, আমি কেবলি সাদা আবরনে হব উজ্জ্বল।


প্রান্তঃ   একদিন আমি তোর শাড়ীর ভাঁজে চোরাকাঁটা হয়ে তোর মাঝে হারাবো নিজের সত্ত্বা। হব তোর পায়ের নূপুর। হাতের চুরি হয়ে ঝন ঝন করে বেজে যাব সারাক্ষণ । হব তোর কমরের বিছা, থাকব তোকেই  ঘিরে।


পূরবীঃ   হা হা হা, হা হা হা, আমি তখন নিঘাড় ঘুমে অচেতন নিঃসঙ্গ অধ্যায়। অনুভূতিহীন পাথরের গায়ে হয়ে রব অতৃপ্ত ছায়া। সৃষ্টির আনন্দ হতে দূরে, হব প্রবল ক্ষয়। আমার তখন শ্বাসে বিষাক্ত বিষ।


প্রান্তঃ  একদিন তুই দেখে নিস, আমি হব তোর চোখের কাজল, হরিয়াল সবুজ বনানী  হয়ে ছেয়ে যাব তোর তনুমনে। কাশবনে সাদা বক হব দুজনে। উড়ে যাব  শরতের আকাশে। হব তোর ঠোঁটের থর থর কাঁপুনি, লজ্জায় যখন তোর গাল লাল হয়ে উঠবে, তখন হব তোর ঠোঁটের তিলক।


পূরবীঃ হা হা হা , হা হা হা, সেদিন আমি হব বড্ড জ্বালাময়ী  বিষণ্ণ  ছন্নছাড়া রাত। আমি তখন শুধুই তোমার অলীক মায়া, খয়েরী আঁধার, ধ্বংসানো নীলাভ শরীর। পুড়ে যাওয়া সলতের মত , বাদামের খোসার মত নিষ্প্রয়োজন অপয়া সংবাদ।